জ্বালানি খাতের জন্য আগামী ২ বছর ঝুঁকিপূর্ণ: নসরুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, দেশের জ্বালানি খাতের জন্য আগামী দুই বছর ঝুঁকিপূর্ণ হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে আমাদের প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে এবং এ কাজে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশ গ্যাস সংকট থেকে বেরিয়ে আসবে বলেও জানান তিনি।
শনিবার (৫ই আগস্ট) রাজধানীর ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) ভবনে ‘বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার: বঙ্গবন্ধুর দর্শন’- শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার, জ্বালানি বিষেশজ্ঞ বদরূল ইমাম, ঢাকা চেম্বার সভাপতি ব্যারিস্টার সমীর সাত্তার বক্তব্য দেন।
আগামী ৭ থেকে ৮ বছরের মধ্যে সমুদ্র থেকে গ্যাস পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন নসরুল হামিদ। বলেন, এতে যোগ হবে নতুন গ্যাস। শিল্পের গ্যাস সংকট থাকবে না। পরিকল্পিত শিল্প গড়লে গ্যাসের কোনো সংকট হবে না। আর ভোলায় শিল্প-কারখানা করলে সঙ্গে সঙ্গেই গ্যাস পাবেন উদ্যোক্তারা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গভীর সমুদ্রে কাজ করার জন্য একটা অবস্থানে এসেছি। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম তেল কোম্পানি এক্সন মবিলসহ অনেক কোম্পানি সমুদ্রে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। এক্সন মবিল লিখিতভাবে আবেদন করেছে। সেটা যাচাই-বাছাই করছি, সার্ভে কমপ্লিট হলে দরপত্র আহ্বান করা হবে। আশা করছি, সমুদ্র থেকে আগামী আট বছরের মধ্যে গ্যাস পাবো।
নসরুল হামিদ বলেন, শতভাগ বিদ্যুতায়নের পর এখন সরকারের লক্ষ নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা।
জ্বালানি সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে শিল্পক্ষেত্রে আর গ্যাস সংকট থাকবে না। ইতোমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করেছি। আরও তিনটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সইয়ের চেষ্টা চলছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল ইমাম বলেন, দেশের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা এখনও অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। অথচ দেশে ব্যাপক গ্যাস সংকট চলছে। বর্তমান গ্যাস সংকট মোকাবিলার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে স্থানীয় গ্যাস অনুসন্ধান বাড়ানো। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে অনুসন্ধান কাজ যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছে না।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সমীর সাত্তার বলেন, অবিলম্বে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে সারাদেশে গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি দেওয়ান সুলতান আহমেদ বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ প্রায়ই অবৈধ গ্যাস সংযোগ অপসারণে তৎপর হয়। কিন্তু কোনো অর্থ ছাড়াই কতদিন ধরে এই অবৈধ গ্রাহকরা এ ধরনের গ্যাস ব্যবহার করছেন তা তারা কখনই প্রকাশ করে না।
এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা আবদুল হক বলেন, বিভিন্ন উদ্যোগের পরও গ্যাস অনুসন্ধানে বড় কোনো অগ্রগতি নেই। তাই কী কী শূন্যতা রয়েছে তা চিহ্নিত করতে হবে।
ব্যবসায়ী আবুল হাসনাত বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে অনেক ব্যবসায়ী নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের ফাইল মন্ত্রণালয়ে জমা দেন। কিন্তু ফাইলগুলো যথাযথ গতিতে চলে না। এমনকি ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে কোনো কোনো ফাইল এক জায়গায় রেখে দেওয়া হয়।