জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের দাবি

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানী তেলের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। এছাড়া বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি, ঋণের সুদ হার কমানো, কারখানার উপযুক্ত জমির ব্যবস্থা করাসহ একগুচ্ছ দাবির কথা তুলে ধরেছেন এফবিসিসিআই।
বুধবার এফবিসিসিআই ভবনে এক মতবিনিময় সভায় এফবিসিসিআই নেতারা এ দাবি জানান। গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, সহ-সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন, সাবেক সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দীনসহ ব্যবসায়ী নেতারা।
আন্তর্জাতিক বাজারে অব্যাহতভাবে জ্বালানি তেলের দাম কমার প্রেক্ষাপটে দেশে দাম সমন্বয়ের দাবি জানিয়ে সংগঠনটির প্রথম সহ-সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম নামতে নামতে ১১০ ডলার (প্রতি ব্যারেল) থেকে মাত্র ৩০ ডলারে ঠেকেছে। এখনই দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করার সময়। তিনি বলেন, সরকার যেহেতু ব্যবসা করে না, সেহেতু দ্রুত এই উদ্যোগ নিবে বলে আমরা আশা করছি।
বিজিএমইএ’র এই সাবেক সভাপতি বলেন, সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছে, তবে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার আরও উন্নতি হওয়া দরকার। বাংলাদেশে কারখানার জন্য জমি পাওয়া সবচেয়ে কঠিন। যেখানে কারখানার উপযুক্ত জমি আছে তার দাম অনেক। পৃথিবীর কোথাও এত দাম নেই। সুদ হার বেশি। এগুলো কমলে উৎপাদন খরচ কমত, তাতে দেশের জনগণ যেমন সুবিধা পেত, তেমনি আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ত।
জ্বালানি সমস্যাকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হিসেবে উল্লেখ করে সংগঠনের পরিচালক ও সাবেক সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, বর্তমান অবস্থায় দেশে বিনিয়োগ হবে না। কারণ বিনিয়োগের প্রধান সমস্যা জ্বালানি। নতুন গ্যাস সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। আর গ্যাস যেখানে আছে সেখানে জমির দাম আকাশচুম্বী। অপরদিকে জ্বালানি তেলের দামও কমছে না। তিনি বলেন, সরকার যদি গ্যাস দিতে না পারে তাহলে গ্যাসের দামে জ্বালানি তেল দিক। দরকার হলে গ্যাসের দামও কিছুটা বাড়াক। তা না হলে মানুষ বিনিয়োগে যাবে না। হেলাল বলেন, গ্যাস দিয়ে পণ্য তৈরি করতে ১০ টাকা খরচ হলে জ্বালানি তেলে একই পণ্য তৈরি করতে ১৫ টাকা বা তার বেশি লাগবে। তাহলে জেনে বুঝে কে এই বিষ খাবে?
সভাপতি মাতলুব বলেন, সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের সমন্বয় অনেক বেড়েছে। যেসব সমস্যা আছে সেগুলো দূর করার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের গভীর আলোচনা হচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অনেক বেড়েছে। ভারতের আদানি ও রিলায়েন্সের মত বহুজাতিক কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আসার আগ্রহ দেখাচ্ছে।
সংগঠনের পরিচালক আবু নাসের বলেন, রাজনৈতিক হানাহানি মুক্ত পরিবেশ থাকলে ২০১৬ সাল হবে বিনিয়োগের বছর। তবে এজন্য জ্বালানি, অবকাঠামো খাতে সরকারের প্রয়োজনীয় বিনিয়োগও করতে হবে।