জ্বালানি তেলের দাম ১২ শতাংশ বেড়েছে

বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১২ শতাংশ বেড়েছে। তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক তেল উত্তোলনের পরিমাণ কমাতে পারে—এমন খবরে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) তেলমন্ত্রী সুহেইল আল-মাজরোয়েইকে উদ্ধৃত করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওপেকের সদস্যদেশগুলো (অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ) এখন তেল উত্তোলনের পরিমাণ কমাতে রাজি।
আবার ভেনেজুয়েলার তেলমন্ত্রী ইউলোগিও ডেল পিনোও বলেছেন, রপ্তানিকারক দেশগুলো এখন তেল উত্তোলনের পরিমাণ কমানোর চুক্তি করার বিষয়ে একটি ‘ভালো পথে’ রয়েছে। সম্প্রতি সৌদি আরব ও রাশিয়া সফর করে এসে তিনি এ কথা বলেন। তেল উত্তোলন কমানোর ব্যাপারে ওপেক এবং ওপেক-বহির্ভূত দেশগুলোকে রাজি করানোর লক্ষ্যে শুরু করা বৈশ্বিক সফরের অংশ হিসেবে তিনি এ দুটি দেশে যান।
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের প্রধান ব্র্যান্ড ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের ব্যারেলপ্রতি দাম গত শুক্রবার আগের দিনের চেয়ে ৩ দশমিক ৩ মার্কিন ডলার বেড়ে ৩৩ ডলার ৩৬ সেন্টে উঠেছে। এর আগে তেলের দাম ২৬ ডলার ৫ সেন্টে নেমে গিয়েছিল, যা বিগত ১২ বছরের সর্বনিম্ন।
একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ২৯ ডলার ৪৪ সেন্টে উন্নীত হয়েছে। দাম বেড়েছিল ১২ শতাংশ বা ৩ ডলার ২৩ সেন্ট, যা ২০০৯ সালের পরে এই বাজারে এক দিনে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি।
এদিকে তেল কারবারিদের অনেকেই অবশ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর খবর নিয়ে সংশয়-সন্দেহের মধ্যে আছেন। তাঁদের ধারণা, ভেনেজুয়েলা ও রাশিয়া তেল উত্তোলনের পরিমাণ কমাতে সৌদি আরবসহ অন্য রপ্তানিকারকদের রাজি করাতে যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তা বৃথা যেতে পারে।
অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করেন, উত্তোলন-সরবরাহের পরিমাণ কমানো গেলে এবং চাহিদা বাড়লে তেলের দাম ঘুরে দাঁড়াবে।
কমার্জ ব্যাংকের বিশ্লেষকেরা বলছেন, ‘আমরা আশা করি, চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রতি ব্যারেল তেলের দাম পুনরায় ৫০ ডলারে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র তেল উত্তোলন কমাবে।
আবার কোনো কোনো জ্বালানি অর্থনীতিবিদ বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমা কিংবা বাড়ার কথা না বলে অস্থিরতা দেখা যাবে বলেই পূর্বাভাস দিয়েছেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে। এর মধ্যে শুক্রবার লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচক ৩ দশমিক ১ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১ দশমিক ৮ শতাংশ ও ডাউ জোন্স ৩ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।