জ্বালানি সংকটে সৌরশক্তির দিকে ঝুঁকছে নেপাল

প্রতিদিন গড়ে ১৫ ঘণ্টা লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ উত্পাদনে ব্যবহূত ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে হিমালয় কন্যা নেপালে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ খাতে বার্ষিক লেনদেন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪ কোটি ডলার। যদিও সৌর প্যানেল স্থাপনের ব্যয় নির্বাহ করা দেশটির দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কঠিন, তবু মধ্যবিত্তরা বাধ্য হয়েই রূপান্তরিত শক্তিতে বিনিয়োগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত নেপালে সৌরশক্তি খাতের সংস্থাগুলো শহরকেন্দ্রিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। সরকার ও এনজিওগুলো শহুরে এলাকার ৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বাড়িতে সৌর প্যানেল বিক্রির জন্য ভর্তুকি দিয়েছে। তবে সম্প্রতি পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যাপারে কাঠমান্ডু বাণিজ্য মেলায় আগত দর্শনার্থীর বিপুল আগ্রহ নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিন দিনব্যাপী এ মেলায় সৌর প্যানেলের বিক্রি ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার ছাড়িয়েছে। আয়োজকরা জানান, ক্রেতাদের চাপ সামাল দিতে প্রায় ৯০টি কোম্পানির প্রতিনিধিদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে।

রাষ্ট্র পরিচালিত অল্টারনেটিভ এনার্জি প্রমোশন সেন্টারের প্রধান রাম প্রসাদ ধিতল বলেছেন, ‘বাড়িতে সৌরশক্তি ব্যবহারের হার প্রতি বছর ১০ শতাংশ করে বাড়ছে। তবে জ্বালানি সংকটের কারণে শহর এলাকায় উপযোগিতা বাড়তে থাকায় আগামী বছরগুলোয় খাতটি আরো প্রসারিত হবে বলে আমরা আশা করছি।’ তার মতে, বিদ্যুতের অভাবে বিপর্যস্ত দেশটির জন্য শক্তির উত্স হিসেবে সৌরশক্তিই ‘আদর্শ বিকল্প’।

স্থলবেষ্টিত নেপালের জ্বালানি সরবরাহ প্রতিবেশী ভারতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। তবে ভারত-নেপাল সীমান্তে অবরোধের কারণে চার মাসের বেশি সময় ধরে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের পাশাপাশি পেট্রল, ডিজেল বা গ্যাসের সরবরাহও ধীরে ধীরে কমেছে। গত সেপ্টেম্বরে নতুন জাতীয় সংবিধান প্রণয়ন করে নেপাল। তবে এতে নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে দাবি করে একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত অবরোধ করে রেখেছে সংখ্যালঘু মাধেশি সম্প্রদায়। অবরোধের পর থেকেই নেপালের পেট্রল পাম্পগুলোয় লম্বা লাইন যেন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ডিজেল ও গ্যাসের কালোবাজারি অনেক বেড়ে গেছে। উদ্ভূত সংকট নিরসনে সরকার আলোচনার সিদ্ধান্ত নিলেও তা ব্যর্থ হয়।

কয়েক মাসের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকটের পর অবশেষে বাড়িতে সৌর প্যানেল বসানোর উদ্যোগ নিয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরামর্শক পঙ্কজ শ্রেষ্ঠ। ৪ হাজার ২০০ ওয়াটের সৌর প্যানেল বসানোর জন্য তাকে খরচ করতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ডলার।