টেংরাটিলার ক্ষতি দেখতে যাচ্ছে আমেরিকার প্রতিনিধি দল
টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র ক্ষতি পর্যালোচনা করতে আমেরিকা থেকে প্রতিনিধি দল আসছে বাংলাদেশে। আগামী বুধবার সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র এলাকা পরিদর্শন করবেন। এলাকার ছবি তোলার জন্য তারা ব্যবহার করবেন ড্রোন। প্রতিনিধি দল ক্ষয়-ক্ষতির হিসাব, গ্রামবাসীর দুদর্শা চিত্র সংগ্রহ এবং স্থানীয় লোকজনের সাক্ষাতকার নেবেন।
পেট্রোবাংলাসহ একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্রে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন দুই দফা বিস্ফোরণ হয়। নাইকো রিসোর্স এই ক্ষেত্রে গ্যাস তোলার জন্য কূপ খনন করছিল। এসময় এই বিস্ফোরণ হয়। সে ঘটনার পর এখন পর্যন্ত ক্ষেত্রের আশেপাশের এলাকায় নানা জায়গা দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছে।
বাংলাদেশ এর ক্ষতি দাবি করলেও তা দিতে সম্মত হয়নি নাইকো। এজন্য তারা হাইকোর্টে মামলা করে। হাইকোর্টের নির্দেশে ফেনিতে নাইকো পরিচালিত আর একটি গ্যাস ক্ষেত্রর পাওনা বন্ধ করে দেয় পেট্রোবাংলা। এরপর নাইকো আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে ইকসিডে দুটি মামলা করে। মামলা পরিচালনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমেরিকার কাউন্সিলিং প্রতিষ্ঠান ফোলি হগ এলএলপিকে নিয়োগ দেয়। বিস্ফােরনে কী পরিমান ক্ষতি হয়েছে তার বিবরন ২৫ মার্চের মধ্যে আদালতে জমা দিতে হবে। এজন্য ফোলি হগ প্রতিনিতিরা মামলা পরিচালনার তথ্য নিতে টেংরাটিলা যাবেন। তারা ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকবেন।
এবিষয়ে প্রতিনিধি দলকে সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ইসতিয়াক আহমদ।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমেরিকা প্রতিনিধি দল টেংরাটিলা এলাকার ক্ষতি দেখতে আগামী বুধবার আসবে বলে পেট্রোবাংলা থেকে জানানো হয়েছে।
২০০৫ সালের সাত জানুয়ারী রাত ১০ টায় টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ডে প্রথম দুর্ঘটনা ঘটেছিল। আগুনের তাপে ওই দিন গভীর রাতেই গ্যাস ক্ষেত্রর উৎপাদন কূপের খনন যন্ত্র (রিগ) ভেঙ্গে যায়। আগুন ২০০ থেকে ৩০০ ফুট ওঠানামা করছিল। পরে এক মাসেরও বেশী সময় জ্বলার পর আপনা-আপনি আগুন নিভে যায়। এরপর দ্বিতীয় দফা বিস্ফোরণ ঘটেছিল একই বছরের ২৪ জুন রাত ২ টায়। মধ্য রাতে নাইকো’র পক্ষ থেকে প্রথমে বিপদ সংকেত বাজানো হয়। পরে রাত তিনটায় নাইকো’র পক্ষ থেকে লোকজনকে এলাকা ছেড়ে তিন কিলোমিটার দূরে চলে যাবার পরামর্শ দেয়া হয়। রাত সাড়ে তিনটায় দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠা আগুন ১০ কিলোমিটা এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। কূপ এলাকার তিন কিলোমিটার দূরেও ভূ-কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
দু’দফা অগ্নিকান্ডে গ্যাসফিল্ডের তিন বিসিএফ গ্যাস পুড়ে যায়। ৫.৮৯ থেকে কমপক্ষে ৫২ বিসিএফ গ্যাসের রিজার্ভ ধ্বংস হয়। টেংরাটিলা, আজবপুর, গিরিশনগর, কৈয়াজুরি, টেংরাবাজার এবং শান্তিপুরের মানুষের ঘরবাড়ী, গাছগাছালি ও হাওরের ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।