টেংরাটিলায় অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম
গ্যাস ক্ষেত্র বিস্ফোরণ হওয়া টেংরাটিলায় অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেছে। এই এলাকায় বসবাস বিপদজনক। এখনও যেভাবে গ্যাস বের হচ্ছে তাতে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
আমেরিকার বিশেষজ্ঞ দল ছাতকের টেংরাটিলা এলাকা সরোজমিন পরির্দশন ও প্রাথমিক পর্যালোচনা করে এই তথ্য বের করেছে। মঙ্গলবার ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্র এলাকা পরিদর্শন করেন।
প্রতিনিধি দল বুধবার টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ডের পাশের গ্রাম গিরিসনগর, আজবপুর, কৈয়াজুরি, টেংরাবাজার এবং শাšিøপুরের মানুষের ঘরবাড়ী, গাছগাছালি ও হাওরের ফসলি জমি ঘুরে দেখেছেন। এ সময় তারা মাটি, পানি, গাছ-গাছালি ও গ্যাসের চাপ পরীক্ষা-নিরিক্ষা করেছেন। সদস্যরা টেংরাটিলার আবুল কাসেম, হারুনুর রশিদ, জসিম উদ্দিন, হুসেন মিয়া, হিরণ মিয়া, নোয়াব আলী, সিরাজ মিয়া, বাবর আলী, আনোয়ার হোসেন, রাশিদ আলী, শামীম আহমদের বসত ঘরে প্রবেশ করে রীতিমত হতবাক হন। এসময় তারা মন্তব্য করেন, ‘এটা কিভাবে সম্ভব, পুরো ঘরেই বুদ বুদ করে গ্যাস উঠছে, এর মধ্যে বসবাস করা হচ্ছে, কেউ কেউ এসব গ্যাস দিয়ে চুলোও তৈরি করেছেন’।
পেট্রোবাংলা ও বাপেক্স’র নিয়োজিত কাউন্সিলিং প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি দল বুধবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে পরিবেশ, প্রতিবেশ, মানুষের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এবং গ্যাসের চাপ পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টেংরাটিলা এলাকার আশপাশের গ্রামের তথ্য- উপাত্ত সংগ্রহ করবেন। প্রতিনিধিদলে আইনজ্ঞ, পরিবেশবিদ এবং ভূতত্ববিদ আছেন।
প্রতিনিধি দলে আমেরিকার ফোলি হগ এলএলপি’র ড. ইয়ান ভর্তুইক, অদ্রে, ক্রিস্টিনা, স্ট্রিপ বেটন, ডায়না ও নিকোলাসসহ ১১ সদস্য রয়েছেন।
প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকা বাপেক্স’র ডিজিএম মিজানুর রহমান জানান, তারা গ্যাস ক্ষেত্রর আশ পাশের মাটি-জমি, গাছ-গাছালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ছবি ও ফুটেজ তোলার প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ দল ও আইনজ্ঞরা ড্রোন ব্যবহার করবেন। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা বাড়ী-বাড়ী গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সকল মানুষের স্বাস্থ্যগত অবস্থা ও বুদ বুদ হয়ে বের হওয়া গ্যাসের চাপ পরীক্ষা করবেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন,নাইকোর দায়ের করা দুটি মামলায় বাংলাদেশের পক্ষে যারা লড়ছেন, তারাই মূলত এখানে তথ্য সংগ্রহের জন্য এসেছেন, তাঁদেরকে কাজে সহায়তা করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার এলাকায় টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্র বিস্ফোরনের পর আন্তজতিক সালিশি আদালতে নাইকো’র দায়ের করা দুটি মামলা মোকাবেলার জন্য এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্রে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন দুই দফা বিস্ফোরন হয়। সেই বিস্ফোরন হওয়ার পর থেকে এখনও সেখানে গ্যাস বের হচ্ছে।