ডিজেলে সর্বোচ্চ শুল্ক আয়: শীর্ষ দশ পণ্যের চারটিই জ্বালানি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর রাজস্ব আয়ের সর্বোচ্চ খাত এখন জ্বালানি পণ্য। ২০২২-২৩ অর্থবছর সবচেয়ে বেশি শুল্ক আয় হয়েছে ডিজেল আমদানি থেকে। এছাড়াও শুল্ক আয়ে শীর্ষ ১০ পণ্যের মধ্যে আছে ফার্নেস ওয়েল, কয়লা ও বিটুমিন।
এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ি, গত অর্থবছর ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭৫২ টন ডিজেল আমদানি হয়েছে। এতে শুল্ক আদায় হয়েছে ছয় হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছর থেকে দ্বিগুণ। আগের অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছর ডিজেল আমদানিতে শুল্ক আদায় হয়েছিল তিন হাজার ৮১৪ কোটি টাকা। ডিজেলে শুল্ক আদায় বেড়েছে ৭৮ শতাংশ।
বর্তমানে জ্বালানি তেল বিক্রি করে বিপিসি লাভ করছে। আবার এনবিআর এই পণ্যে আয় করেছে দ্বিগুণ। মানে আমদানি খরচের চেয়ে ভোক্তা পর্যায়ে অনেক দামে বিক্রি হচ্ছে।
২০২২-২৩ অর্থবছর ফার্নেস ওয়েল থেকে তার আগের বছরের চেয়ে শুল্ক কম আদায় হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছর পাঁচ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা আদায় হলেও ২০২২-২৩ অর্থবছর হয়েছে চার হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ডলার সংকটের কারণে বেসরকবারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে যথাযথ তেল সরবরাহ করা যায়নি। এজন্য ফার্নেস আমদানিও কিছুটা কম হয়েছে।
ডিজেল ছাড়াও গত অর্থবছর পর্যায়ক্রমে চিনি, ফার্নেস অয়েল, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাথর, প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্টিল শিট, কয়লা, বিটুমিন, কমলা ও আপেল আমদানিতে সর্বোচ্চ শুল্ক আদায় হয়েছে। এই ১০ পণ্য থেকে ২৬ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা শুল্ক আদায় করেছে এনবিআর। তার আগের বছর হয়েছিল ২৪ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা।
ডিজেল, অকটেন, ফার্নেস অয়েল, জেট ফুয়েল থেকে আগে ১০ শতাংশ শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ও ৫ শতাংশ অগ্রিম কর আদায় করা হতো। যদিও চলতি অর্থবছর থেকে শুল্ক নির্দিষ্ট করে ১৩ ধরনের জ্বালানি পণ্যে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা করা হয়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছর ৭৯৯ কোটি ৩১ লাখ ডলারের জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে ৯৩ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের অপরিশোধিত এবং ৭০৫ কোটি ৭২ লাখ ডলারের পরিশোধিত জ্বালানি তেল। ২০২২-২৩ অর্থবছর জ্বালানি পণ্য আমদানিতে খরচ কমেছে ৫৭৭ কোটি ২৮ লাখ ডলার।
আমদানি করা কয়লা দিয়ে পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চলছে। মাতারবাড়ি চলছে পরীক্ষামূলক। এতে কয়লা আমদানি বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে গতঅর্থবছর ৯ লাখ ৬২ হাজার ২৩৯ টন বেশি কয়লা আমদানি হয়েছে। এখান থেকে শুল্ক আদায় হয়েছে এক হাজার ২৬৬ কোটি টাকা, যা এর আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৪৬ কোটি টাকা বেশি।
বিটুমিনে ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে ২৮৮ কোটি টাকা বেশি শুল্ক আদায় হয়েছে; আর গত অর্থবছর হয়েছে এক হাজার ১৪০ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থবছর ডিজেলের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শুল্ক আদায় হয়েছে চিনি আমদানিতে। গত অর্থবছর চিনি আমদানি থেকে চার হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা শুল্ক আদায় হয়েছে। সিমেন্ট ক্লিংকার থেকে তিন হাজার ২৮৯ কোটি টাকা; পাথর আমদানিতে এক হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা; প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্টিল শিট থেকে এক হাজার ৩২০ কোটি টাকা; খাদ্যপণ্য কমলায় এক হাজার ১১২ কোটি এবং আপেল আমদানিতে ২০২২-২৩ অর্থবছর শুল্ক আদায় হয়েছে ৯৯২ কোটি টাকা।