ঢাকায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই
ঢাকা ও এর আশপাশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিক্রি করে ডিপিডিসি লাভ করছে। পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ালেও এই লাভ থাকবে। যদিও নিজেদের লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তুলে ধরেছে ডিপিডিসি।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কারিগরি কমিটি ডিপিডিসি’র হিসাব পর্যালোচনা করে এই তথ্য দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিইআরসি ডিপিডিসি’র বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর উপর শুনানী করে। কাওরানবাজার টিসিবি মিলনায়তনে এই শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীতে বিইআরসি কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি তাদের পর্যালোচনা উপস্থাপন করে। তবে ডিপিডিসি জানায়, এখন না লোকসান না লাভ – পর্যায়ে থাকলেও পাইকারি দাম এবং সঞ্চালনে হুইলিং চার্জ বাড়ালে লোকসান হবে। তখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো প্রয়োজন হবে।
তবে ডিপিডিসি জানিয়েছে, পরিচালন ব্যয়, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ও হুইলিং চার্জসহ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম সাত টাকা ৪৪ পয়সা। বিক্রি করতে হয় সাত টাকা ৩৮ পয়সা। প্রতি ইউনিটে লোকসান ছয় পয়সা।
কমিশনের চেয়ারম্যান এ আর খানের সভাপতিত্বে কমিশনের সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, প্রকৌশলী মো: দেলোয়ার হোসেন, মো. মাকসুদুল হক ও রহমান মুরশেদ গণশুনানীতে উপস্থিত ছিলেন। গণশুনানীতে ডিপিডিসি প্রস্তাব উত্থাপন করেন ডিপিডিসির পরিচালক (অর্থ) মো. আসাদুজ্জামান। এ সময় ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) নজরুল হাসানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) হিসাব পর্যালোচনা করে কারিগরি কমিটি জানিয়েছে, বর্তমান পাইকারি, সঞ্চালন ও খুচরা দাম বিবেচনায় ২০১৪-১৫ অর্থ-বছরে ডিপিডিসি মুনাফা করবে ২৯০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আর কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী পাইকারি ও সঞ্চালন মহৃল্য বাড়ানো হলে ডিপিডিসির মুনাফা হবে ৮১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এই অর্থবছরে আয় হবে পাঁচ হাজার ৩৪ কোটি ২৩ লাখ কিন্তু খরচ হবে চার হাজার ৯৫২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার সকালে বিতরণ পর্যায়ে সাধারণ গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) দেয়া ২২ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাবের শুনানী হয়। এতে কারিগরি কমিটি জানায়, পিডিবির তিন দশমিক ০৯ শতাংশ বাড়ানোর প্রয়োজন হবে। তবে পাইকারি ও সঞ্চালন পর্যায়ে প্রস্তাবিত দাম বাড়ালে সাত দশমিক ৮৩ শতাংশ বাড়াতে হবে।
কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি উপদেষ্টা এম. শামসুল আলম বলেন, ডিপিডিসি মুনাফা করছে। পিডিবিরও বিতরণ পর্যায়ে তেমন ঘাটতি নেই। বিদ্যমান মূল্যহারে ওজোপাডিকো’র লোকসান নেই। তাই পাইকারি দাম না বাড়ালে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) প্রস্তাবের শুনানি হবে ২৫ জানুয়ারি। আরইবি সাড়ে ১৫ শতাংশ ও ডেসকো ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।