তীব্র শীতে জবুথবু দেশ

ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসের ঝাপটা দিয়েই শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। বুধবার দেশব্যাপী বৃষ্টির পর জেঁকে বসেছে শীত। শুক্রবার দিনের আলোয় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও দুপুরের পর থেকে আবহাওয়া বদলে যায়। আকাশ ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। এর সঙ্গে শুরু হয় কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন থাকতে পারে।
শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে নি¤œ আয়ের মানুষ। দরিদ্র মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় এমনিতে রাস্তায় মানুষ ছিল কম। তার ওপর শীতের কারণে সন্ধ্যার পর কিছু কিছু এলাকা একেবারে জনশূন্য হয়ে পড়ে। বিশেষ করে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সারাদেশের রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে সামান্য।
আবহাওয়া অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, মাঘ মাসে শীত বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। এর ওপর আবার বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা আরো নেমে গেছে। একই সঙ্গে সারাদেশে শুরু হয়েছে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। এ অবস্থা আরো দু’একদিন থাকতে পারে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়,  উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশের এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। স্বাভাবিক লঘুচাপ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। লঘুচাপের কারণে আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্য রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
দেশের ৫টি বিভাগের ২২ জেলায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি। রিকশাচালক আসলাম উদ্দিন বলেন, একদিন রিকশার প্যাডেল না চললে সংসারের প্যাডেলও চলে না। তাই বাধ্য হয়ে শীত উপেক্ষা করেই বাড়ির বাইরে বের হতে হয়েছে। এদিকে ঠাণ্ডা থেকে রেহাই পেতে দরিদ্র মানুষ আগুন জ্বালিয়ে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছে।
শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৮, চট্টগ্রামে ১৭ দশমিক ৫, সিলেটে ১৩ দশমিক ৭, রাজশাহীতে ১১ দশমিক ৫, রংপুরে ১৩ দশমিক ৫, খুলনায় ১২ দশমিক ৫ এবং বরিশালে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, লঘুচাপের কারণে মেঘ ও কুয়াশার প্রভাবে সারাদেশে তাপমাত্রা কমেছে। এ ছাড়া কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থা শনিবার পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে মেঘ কেটে গেলেই শীতের তীব্রতা আরো বাড়তে পারে।