তেলের দাম আরও কমেছে
জ্বালানি তেলের দাম আরও কমেছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম ৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে দাঁড়ায় ৪২ দশমিক ৮৫ ইউএস ডলার। ২০০৯ সালের মার্চের পর এই দাম সবচেয়ে কম। অর্থাৎ গত ৬ বছরে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হয়েছে জ্বালানি তেল।
মঙ্গলবার ইউএস সংবাদমাধ্যম সিএনএনমানি এক খবরে জানিয়েছে, গত ৫ দিন ধরেই এই দরপতন অব্যাহত রয়েছে। আগামীতে দাম আরো কমে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই দাম ব্যারেলপ্রতি ৩০ ডলারে নেমে আসতে পারে।
এদিকে তেলের দাম কমে যাওয়ার খবরে গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব গাড়িচালক ৫০-৫৫ ডলারে তেল কিনেছিলেন তাদের ঠোঁটের কোণে হাসি জেগে উঠছে।
শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, তেলের দাম কমার খবরে বিশ্বের সব গাড়িচালকের মুখে হাসি ফুটে ওঠা স্বাভাবিক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, এক মাস আগেও তেলের দাম যে আবার কমে আসবে_ এ বিষয়ে বলাবলি করছিল লোকজন। বিশ্লেষকরা আশা করছেন, আগামীতে তেলের দাম আরো কমে ব্যারেলপ্রতি ৪০ ইউএস ডলার বা তার নিচে ঠেকতে পারে।
ওয়েল প্রাইস ইনফরমেশন সার্ভিসের প্রধান তেল বিশেষজ্ঞ টম ক্লোজা বলেন, আমি মনে করি, বাজারে তেলের দাম ৩০ ডলারের কাছাকাছি থাকবে।
সিএনএনমানির খবরে আরো জানানো হয়, বিশ্বে এখন পর্যাপ্ত তেল রয়েছে। তেলের অতিরিক্ত সরবরাহ থাকার কারণে ব্যারেলপ্রতি তেলের ১০০ ডলার থেকে নেমে আসে ৫০ ডলারে। সোমবার এই দাম ছিল ৪৩ ডলারের কাছাকাছি।
প্রসঙ্গত, একদিকে ওপেক তাদের তেলের উৎপাদন না কমানোর সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। অন্যদিকে পাওয়ার প্লেয়ার বলে খ্যাত সৌদি আরবও তেলের উৎপাদন কমানোর কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। ফলে অনেকটা স্পষ্ট, কেন বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা কম বা আরো কমতে পারে।
এর আগে গত মাসের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিবিদ ও কলামিস্ট গ্যারি শিলিং বিশ্ববাজারে তেলের দাম আরো কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেন। তিনি মনে করেন, আগামীতে তেলের দাম কমে একেবারে তলানিতে ঠেকতে পারে। এমনকি এই দাম হতে পারে ১০ থেকে ২০ ডলার।
এর পেছনে যুক্তি তুলে ধরে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাজারে মূলত তেলের সরবরাহ বাড়ছে; তবে সে তুলনায় কমছে চাহিদা। এভাবে চলতে থাকলে ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম ১০ ডলারও হতে পারে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার হিসাবে, ২০১৪ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ১১০ ডলারের কাছাকাছি। জুলাইতে তা ৯০-৯৫ ডলারে নেমে আসে। আর ক্রমে তা কমতে কমতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দাঁড়ায় ৪৫ ডলারের কিছু ওপরে।