দেড় দশকেও চূড়ান্ত হয়নি কয়লানীতি

বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা

কয়লা ব্যবহার ও উত্তোলনের নীতি করার উদ্যোগ দীর্ঘদিনের। সব সময় এই নীতির প্রতি যথেষ্ট গুরুত্বের কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি এখনো। ২০০৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কয়লানীতির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন চূড়ান্ত হয়নি।

২০১৪ সালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই নসরুল হামিদ বলেছিলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে কয়লা নীতিমালা করা হবে। সেই ঘোষণার পর ছয় বছর চলে গেছে।
আইআইএফসিকে খসড়া কয়লানীতি করার দায়িত্ব দেওয়া হয় ২০০৫ সালে। পরে আইআইএফসির খসড়ায় অনুমোদন না দিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নুরুল ইসলাম প্রতিবেদন পর্যালোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। অধ্যাপক নুরুল ইসলাম খসড়া কয়লানীতির বিভিন্ন পরিবর্তনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেন, সেটা বিএনবি সরকারের সময়। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মতিন পাটোয়ারীর নেতৃত্বে নতুন কমিটি গঠন করে। পাটোয়ারী কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার পাটোয়ারী কমিটির খসড়া আবার পর্যালোচনার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে। এতে প্রধান করা হয় তৎকালীন জ্বালানি সচিবকে। আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি পাটোয়ারী কমিটির খসড়া যাচাই-বাছাই শেষে, খসড়ার নীতি ও বাস্তবায়ন অংশকে দুই ভাগে ভাগ করে। কিছু সংশোধনীসহ শুধু নীতি অংশটি অনুমোদনের সুপারিশসহ জমা দেয়। আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ চূড়ান্ত না করে আবারও উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনার জন্য কমিটি গঠনের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যার মোশাররফ হোসেনকে প্রধান করে কমিটি করা হয়। সেই কমিটিও একটি সুপারিশ জমা দেয়। এভাবে পর্যালোচনার পর পর্যালোচনা করতে করতে ১৭ বছর শেষ।
বাংলাদেশে বর্তমানে ৫টি কয়লা ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এর মধ্যে বড়পুকুরিয়া থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। অন্য চারটি ক্ষেত্র হচ্ছে রংপুরের খালাশপীর, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী, দীঘিপাড়া ও জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ। ৫টি খনির মধ্যে জামালগঞ্জ কয়লা খনিটি ১৯৫৯ সালে আবিষ্কার হয়। জয়পুরহাটে জামালগঞ্জ কয়লাক্ষেত্র আবিষ্কার হয় ১৯৬২ সালে। এখন পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বড় খনি এটা। এই ক্ষেত্রটিতে আনুমানিক কয়লার মজুদ ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টন। অন্যদিকে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক অধিদপ্তর আবিষ্কার করে খালাশপীর, দীঘিপাড়া ও বড়পুকুরিয়া কয়লাক্ষেত্র। আর ফুলবাড়ী কয়লা ক্ষেত্র আবিষ্কার করে অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি।