নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ভর্তুকী দেয়া হবে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে এখাতে সরকার ভর্তুকী দেবে। গ্রামে ও শহরে ভিন্ন ভিন্নভাবে এই ভর্তুকী দেয়া হবে। এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাম অনেক বেশি। দাম কমানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।

গতকাল রোববার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ‘সংশোধিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০১৪’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি কর্তৃপক্ষ (স্রেডা), জার্মান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জিআইজেড) ও পাক্ষিক পত্রিকা এনার্জি এন্ড পাওয়ারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সভার সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত সচিব তাপন কুমার রায়। এনার্জি এন্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম. তামিম ও নুরুল ইসলাম, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, স্রেডার চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাব খান, পিডিবি চেয়ারম্যান আবদুহু রুহুল্লাহ ও আরইবি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈন উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের নীতি করা হবে। জনগণের মতামত নিয়েই এই নীতি করা হবে। সঠিক সময়ে নীতি করতে না পারায় গ্রামাঞ্চলের মানুষ এই বিদ্যুৎ ব্যবহারে পিছিয়ে আছে। শহরেও এর ব্যবহার কিভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, যারা সৌর বিদ্যুৎ করে তারা প্রথমে আগ্রহ দেখায় কিন্তু পরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কেন এটা হয় তা খতিয়ে দেখতে হবে। বাংলাদেশে বায়ু বিদ্যুতের অনেক সম্ভাবনা আছে। কিন্তু প্রযুক্তির অভাবে আমরা করতে পারি না। প্রচুর নদী আছে আমাদের। প্রচুর পানি গড়িয়ে চলে যাচ্ছে। এই পানি থেকে আরো বিদ্যুৎ উত্পাদন সম্ভব। সেটা আমরা কাজে লাগাতে পারি। ভারত, ভূটান, নেপাল, মিয়ানমার থেকে আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুৎ পেতে পারি। বিশেষ করে পানি বিদ্যুৎ। ভারতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উত্পাদন খরচ কমিয়েছে। আমরাও সেই চেষ্টা করছি।

ম. তামিম বলেন, ৯৬ সালে এমন একটা নীতি করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে আমাদের নীতির সাথে সাথে তা বাস্তবায়নও করতে হবে। বাস্তবায়ন করাটাই জরুরী। নুরুল ইসলাম বলেন, নতুন যে নীতি করা হয়েছে সেখানে অনেক ভুল আছে। সেই ভুল এখনই ঠিক করতে হবে।

তাপস কুমার রায় বলেন, সকলের মতামত নিয়ে নীতি চূড়ান্ত করা হবে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান এ আর খান বলেন, বিদ্যুতের উত্পাদন দক্ষতা বাড়ালে উত্পাদন খরচও কমবে। আমাদেরকে দিকে যেতে হবে। বিদ্যুৎ উত্পাদন খরচ কোথাও কম কোথাও বেশি। এই দাম সমন্বয় করতে হবে। তিনি বলেন, এমন এলাকা আছে যেখানে অবস্থানগত কারণে বিদ্যুৎ পৌছানো সম্ভব নয়। কিন্তু তাদের বিদ্যুৎ দিতে হবে। বিদ্যুতের দাম সমপ্রতি বাড়ানো হয়েছে। এই দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে ৫০ ইউনিট পর্যন্ত কম দামে বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, দ্বৈত জ্বালানি দিয়ে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উত্পাদনের বাধ্যবাধকতা আসছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়া হবে।

প্রবন্ধে সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, বেসরকারিভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো যায়। এভাবে দাম বাড়াতে গেলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুতের দাম খরচের চেয়ে বেশি রাখতে হবে। এই নীতির আলোকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌছানো সম্ভব।