নবায়নযোগ্য জ্বালানির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকলেও এখনও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে। চট্টগ্রামের কাপ্তাই-এ কর্ণফুলী নদীর উপর দেশের প্রথম পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় ১৯৫৭ সালে। ৬৩ বছর পরও আশানুরূপ বাড়েনি পানি বাতাস কিম্বা সৌর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন। তবে ৪৫ লাখ বাড়িতে সৌর প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ছে। ‘কস্ট বাই ডাউন’ সিস্টেমের মাধ্যমে গ্রামীন বাড়িগুলো আলোকিত করা হচ্ছে।
২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হবে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ ভাগ, যা দুই হাজার মেগাওয়াট। আর ২০২১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হবে মোট জ্বালানির ১৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে হবে ২০ শতাংশ। এমন লক্ষ্য ঠিক করেছে স্রেডা।
যে গতিতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের কাজ হচ্ছে তাতে সময়মত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে কী না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কাজের গতি বাড়াতে হবে। তবেই নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তি গ্রামাঞ্চল, উপশহর ও শহর এলাকায় ছড়িয়ে দিতে হবে। প্রশিক্ষিত, দক্ষ এবং যোগ্য জনবল নিয়োগ দিতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের বিনিয়োগে সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে। স্থানীয় প্রযুক্তি উন্নয়নে উৎসাহ দিতে হবে। তাহলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার হবে।
জীবাশ্ম জ্বালানি সীমিত, তাই ভবিষ্যতের জ্বালানি ব্যবস্থা নির্ভর করবে নবায়নযোগ্যর ওপর। এখন নবায়নযোগ্যের দামও কমেছে। তাই এর সম্ভাবনাও বাড়ছে।
বায়োগ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতের ভাল সম্ভাবনা আছে। দেশের সহজপ্রাপ্য বায়ো-ম্যাসের উৎসগুলো হলোÑতুষ, ফসলের অবশিষ্টাংশ, কাঠ, পাটকাঠি, পশুর বর্জ্য, পৌর বর্জ্য, আখের ছোবড়া ইত্যাদি। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেয়া যেতে পারে। রান্নাসহ ছোট ছোট কাজে এই জ্বালানি ভূমিকা রাখতে পারে।
বিদ্যুৎখাতের সাফল্য এখন প্রশ্নাতীত। কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সেই সাফল্য একেবারেই ম্লান। সরকারের পরিকল্পিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে নবায়নযোগ্য উৎসের বিদ্যুৎ। সৌরটা কিছুটা হলেও বায়ু এবং পানি হয়ইনি। যদিও এগুলোতেই উৎপাদন খরচ কম। যা হয়েছে তা বেশি দামের সৌর বিদ্যুৎ।
জীবাশ্ম জ্বালানি কমতে থাকা এবং এতে খরচ বাড়তে থাকায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমানোর অন্যতম উপায়ও বটে।