পদ্মাসেতুতে ব্যবহার হচ্ছে মধ্যপাড়া খনির পাথর
অবশেষে পদ্মাসেতুতে ব্যবহার হচ্ছে দিনাজপুরের পাথর। পদ্মা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষ দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি থেকে পাথর কিনতে সম্মত হয়েছে। এই খনির পাথর মানসম্মত নিশ্চিত হয়েই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর ফলে একদিকে যেমন লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপানরিত হতে যাচ্ছে দেশের একমাত্র পাথর খনি। অন্যদিকে এই পাথর ব্যবহারের ফলে পদ্মা সেতু নির্মানে আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে সাশ্রয় হবে বৈদেশীক মুদ্রা।
সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি, পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি এলাকা পরিদর্শন করেন। খনি পরিদর্শন করে প্রতিনিধি দলের কর্মকর্তারা এই খনির পাথরের গুনগত মান স¤ক্সর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু তৈরীতে আগামী চার বছর প্রায় ৭০ লাখ মেট্রিকটন পাথর লাগবে। এরমধ্যে আগামী তিনমাসে সেতু প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রীজ ও সিনো হাইড্রো কর্তৃপক্ষ ৬০ হাজার টন পাথর কিনবে। বর্তমানে মধ্যপাড়া খনিতে প্রায় চার লাখ মেট্রিকটন পাথর মজুদ আছে। মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল বাশার জানান, পদ্মা সেতুর উল্লেখযোগ্য অংশের প্রয়োজনীয় পাথর এই খনি থেকে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। আগামী এক বছর প্রতিদিন এখান থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন পাথর তোলা হবে। এতে সেতুর ২৫ থেকে ৩০ শতাংশের চাহিদা মেটানো যাবে। পদ্মা সেতুতে যে পরিমান পাথর প্রয়োজন হবে তার প্রায় ৫০ শতাংশ পাথর এই খনি থেকে সরবরাহ করা যাবে। এছাড়া ঢাকা এলিভেটেড ওয়ে পিপিপি, কর্ণফুলি নদীর তলদেশে বহুলেন টানেল প্রকল্পের প্রতিনিধিরা মধ্যপাড়া খনির পাথর ব্যবহারের আশ্বাস দিয়েছেন।
পদ্মা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: কামরুজ্জামান জানান, মধ্যপাড়া খনি থেকে উত্তোলিত পাথরের গুনগত মান ভাল। ইতিমধ্যে ৬০ হাজার টন পাথর কেনার আদেশ দেয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতুর অপর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন লি. এর ব্যবস্থাপক (ক্রয়) জাও জিয়াংউই জানান, এখানকার পাথরের মান পরীক্ষা করা হয়েছে। এখানকার পাথরের মান বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে ভাল।
পদ্মা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, পদ্মা সেতু নির্মানে প্রয়োজন হবে প্রায় ৭০ লাখ মেট্রিক টন পাথর। কিন্তু মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড এর পুরোটা সরবরাহ করতে পারবে না। তাই ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পাথর এই খনি থেকে নেয়া হবে।
পদ্মা সেতু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম গ্রুপের প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জানান, পদ্মা সেতু তৈরীতে বোল্ডার পাথরের প্রচুর চাহিদা আছে। পাথর আমদানি করলে খরচ আরও বেড়ে যেত।