পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ‘কালচার ফর সেফটি’ জরুরি: আবিদ ইমতিয়াজ
বলা হচ্ছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একেবারেই নিরাপদ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তো মানুষই এটা পরিচালনা করবে। মানুষ তো ভুলের উর্দ্ধে নয়। মানুষই তো এটা পরিচালনা করবে। সেই মানুষের প্রশিক্ষণ বা তার নিজের নিরাপত্তা বিষয়ক জ্ঞান নিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে গবেষণা চলছে। বাংলাদেশে এবিষয়ে প্রচুর গবেষণা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে মানুষের নিরাপত্তা সংস্কৃতি নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পরমাণু নিরাপত্তা শাখার প্রধান, ড. আবিদ ইমতিয়াজ এর সাথে।
বলা হচ্ছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একেবারেই নিরাপদ। নিরাপত্তা নিয়ে কোন সমস্যা নেই। এমনভাবে এই প্রযুক্তি তৈরি যে তা মানুষ বা পরিবেশের জন্য কোনরূপ ক্ষতিরকারণ হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তো মানুষই এটা পরিচালনা করবে। মানুষ তো ভুলের উর্দ্ধে নয়।আপনি কী মনে করেন?
– পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যে প্রযুক্তি তা একাধারে যেমন অত্যধুনিক, অন্যদিকে তা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। নির্ভুলভাবে এর ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা করা গেলে এ প্রযুক্তির কারণে মানুষ বা পরিবেশের ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা অতি নগণ্য। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার পারমাণবিক স্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অন্যতম উপায়। কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। স্পর্শকাতর পারমাণবিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও পরিচালনার ক্ষেত্রে মেশিন ও মানুষকে পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। আর যে সকল মানুষ এ কাজের সাথে যুক্ত থাকেন তাদেরকে বিশেষভাবে দায়িত্বশীল এবং নিরাপত্তা সচেতন হতে হয়, তাদেরকে নিরাপত্তা সংস্কৃতি বা সেফটি কালচারের সাথে নিবিড়ভাবে অভ্যস্ত থাকতে হয়। এর সঙ্গে প্রত্যেক মানুষের আচার-আচরণ, স্বভাব, বিশ্বাস, মৌলিক ধ্যানধারণা পারমাণবিক স্থাপনায় টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থাপনায় অত্যন্তগুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বিবেচ্য বিষয়। এই প্রযুক্তির ব্যবহার ও পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষের শুধু সাধারণ বিজ্ঞানের জ্ঞান থাকাই যথেষ্ট নয়, সামাজিক বিজ্ঞা্ন বিষয়ক প্রচুর জ্ঞান থাকা দরকার। সাধারণ বিজ্ঞান আর সামাজিক বিজ্ঞা্ন এ দুইয়ের পার্থক্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে ও ওয়াকিফহাল থাকাটা জরুরি। সাধারনত বিজ্ঞানে মানুষ নিয়তিবাদ জগৎ নিয়ে চিন্তা করে, যেখানে ফল সম্পর্কে সাধারণভাবে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে সা্মাজিত বিজ্ঞানে মানুষকে অধিকতর বাস্তব জগৎ নিয়ে ভাবতে হয়, যেখানে ফলাফলের ধারণা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো সুবিশাল কর্মযজ্ঞে, প্রস্তুতি পর্ব থেকে শুরু করে চালু হওয়া পর্যন্ত শত শত মানুষের সংশ্লিষ্টতা থাকে। একথা অনস্বীকার্য যে মানুষ স্বভাবতই ভুল করে। মানুষের এ ‘ভুল’ করার সহজাত প্রবৃত্তি পুরোপুরি নির্মূল করা প্রায় অসাধ্য। তা সত্বেও মানুষের কাজের ক্ষমতা অব্যাহতভাবে উন্নত করে বাস্তবিকভাবে তা কমিয়ে আনা সম্ভব। আর তার জন্য কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। থাকা অত্যাবশ্যকীয়।
নিরাপত্তা সংস্কৃতি বা ‘কালচার ফর সেফটি’ কীভাবে প্রতিষ্ঠিত করা যাবে?
– এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা। এ বিষয়টির আগে সংস্কৃতি বা কালচার, প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি, নিরাপত্তা সংস্কৃতি বিষয়গুলো কী এবং এদের মধ্যে মিল-অমিল আসলে কোথায়, কী কী উপাদান নিরাপত্তা সংস্কৃতিতে প্রভাবিত করতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে যথাসম্ভব স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। বিষয়গুলো খুব সরল শোনালেও সীমিত পরিসরে এবিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব নয়, এমন কি তা সমীচীন ও নয়।
সাধারণজ্ঞান প্রয়োগ করে আমরা অনেকেই ধারণা করি যে, আমাদের দৈনন্দিন কাজগুলো আমরা যেভাবে চর্চাকরি, সেটাই আমাদের কালচার বা সংস্কৃতি। ধারণাটা তাত্ত্বিকভাবে ঠিক না হলেও তা একেবারে বিষয়-বর্জিত, সে কথা বলা যাবে না। প্রশ্ন হলো, আমরা যেভাবে কাজগুলো করি, কেন তা সেভাবে করি? প্রকৃতপক্ষে আমরা যেভাবে কাজ করি, তাহলো আমাদের আচরণ বা স্বভাব, যাকে সংস্কৃতির দৃশ্যমান ফলাফল বলা হয়ে থাকে।এই আচরণ বা স্বভাব হলো সংস্কৃতির অংশ। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাস্ট্রীয়ভাবে নিরাপত্তা, সততা, সত্যবাদিতা, শৃঙ্খলা, পারস্পরিক সম্মানবোধ ইত্যাদি বিষয়ক শিক্ষা-সচেতনতা সৃষ্টির জন্য অবিরত চেষ্টা চালানোর মাধ্যমে দেশে নিরাপত্তা সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। আর স্বভাব বা আচরণ যেহেতু সংস্কৃতির অংশ, আমাদের স্বভাব বা আচরণ যেভাবে বদলাবে আমাদের সংস্কৃতিতেও তার প্রতিফলন ঘটবে।
সাংগঠনিক নিরাপত্তা সংস্কৃতি বলতে কী বোঝাচ্ছেন?
– দেখুন, এই বিষয়গুলো আমি এখনও শিখছি। এটি আমার আগ্রহের এবং গবেষণার বিষয়ও বটে। প্রখ্যাত সমাজ বিজ্ঞানী প্রফেসর এডগারশেইন
সাংগঠনিক সংস্কৃতির বিষয়টি তাঁর বহুল প্রশংসিত ‘সাংগঠনিক সংস্কৃতি ও নেতৃত্ব’ (অর্গানাইজেশনাল কালচার এন্ড লিডারশিপ) বইয়ে (প্রকাশক জসি বোস ২০১০) বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করেছেন। একটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি সৃষ্টিতে বা সুবিধাজনকভাবে তা গড়ে তুলতে সহায়তা করা হলো ঐ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের অনন্য ভূমিকা। এ কথা বলা যায় যে, প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্ব সংস্কৃতি সৃষ্টি বা পরিবর্তন করে থাকে আর ব্যবস্থাপনা পরিষদ সেই সংস্তৃতির মধ্যে কাজ করে। বিষয়টা লক্ষ্য করবেন, প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব আর ব্যবস্থাপনা কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। দেশ বা সমাজের ক্ষেত্রেও তাই। ভূমিকা ভিন্ন হলেও সংস্কৃতি সৃষ্টি বা পরিবর্তন করতে, টেকসই করতে নেতৃত্ব আর ব্যবস্থাপনাকে যুগপৎভাবে কাজ করতে হয়। তার অর্থ এই নয় যে সংস্কৃতি সৃষ্টি বা পরিবর্তন করাসহ অসাধ্য কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বই শুধু সংস্কৃতি একমাত্র নিয়ন্ত্রক। প্রকৃতপক্ষে, সংস্কৃতি বলতে কোনো গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের সে সব উপাদানকেই বোঝায়, যা সর্বাধিক সুস্থিত এবং ন্যূনতম নমনীয়। প্রফেসর শেইনের মতে, সংস্কৃতি একদিকে যেমন একটি গতিশীল বিষয়, যা প্রতিনিয়ত আমাদের পরিবেষ্টন করে থাকে, আমাদের পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে যা সর্বদা সম্পাদিত বা সৃষ্ট হয় এবং নেতৃত্বের আচরণ দ্বারা যা রূপায়িত হয়; অন্যদিকে বলা হয়, সংস্কৃতি হলো বিন্যস্ত অবকাঠামো, রুটিনস্, রুলস্ এবং নরমস্ দ্বারা প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রিত স্বভাব। সাংগঠনিক সংস্কৃতি তৈরি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনা হলো নেতৃত্বের নির্যাস− যাতে প্রতিভাত হয় যে, নেতৃত্ব আর সংস্কৃতি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
নিরাপত্তা সংস্কৃতি এবং নিরাপত্তার জন্য সংস্কৃতি কি একই বিষয়? নাকি এই দুই ‘ধারণা’য় ভিন্নতা আছে?
– দেখুন, পরমাণু বিশ্বে ‘সেফটি কালচার’ এবং ‘কালচার ফর সেফটি’ ধারণায় দৃষ্টিভঙ্গী ভিন্ন। লক্ষ্য একই। মূলতঃ পেশাদরী পরমাণুবিদদের মধ্যে নিরাপত্তা মূল্যবোধ গুলো সুবিন্যস্ত করা এবং এটাকে তাদের এক প্রকট বৈশিষ্ট্যরূপে পরিগণিত করা। বিশ্বে বাণিজ্যিকভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে প্রায় ছয় দশকেরও বেশি সময় থেকে। এপর্যন্ত তিনটে বড় ধরনের পারমাণবিক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। প্রত্যেক দুর্ঘটনা-পরবর্তী শিক্ষা থেকে বিশ্বের পরমাণু শিল্প তাদের রিঅ্যাক্টর প্রযুক্তির নকশা ও পরিচালনা পদ্ধতিতে উন্নততর নিরাপত্তা সংযুক্ত করেছে। ১৯৭৯ সালে সংঘটিত ‘থ্রি মাইল আইল্যান্ড দুর্ঘটনা’র পর মানুষের ভূমিকা বা ‘হিউম্যান ফ্যাক্টর’-এর ধারণা আসে। ১৯৮৬ সালের ‘চেরনো বিল দুর্ঘটনা’র পর আইএইএ কর্তৃক নিরাপত্তা সংস্কৃতি বা ‘সেফটি কালচার’ ধারণা প্রবর্তিত হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালে সংঘটিত ‘ফুকুশিমা দুর্ঘটনা’র পর নকশার বাইরের (বিহাইন্ড ডিজাইন বেসিস এক্সর্টাানাল ইভেন্ট – বিডিবিইই) বিষয়টি বিবেচনায় আনার প্রয়োজনীয়তা জোরালো হয়। পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, সরকারের উপদেষ্টা পরিষদসহ দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা সংস্কৃতি যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করার বিষয়টি আবারও গুরুত্বের সঙ্গে সামনে চলে আসে। কিন্তু প্রশ্ন জেগেছে, গত প্রায় তিন দশক ধরে প্রবর্তিত ‘নিরাপত্তা সংস্কৃতি’-এর ধারণা বিশ্বের পরমাণু শিল্পের জন্য ঠিক কতটা সহায়ক হয়েছে? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ‘নিরাপত্তা সংস্কৃতি’-এর ধারণা থেকে নেয়া কর্মকাণ্ড গুলোর মাধ্যমে এর প্রত্যাশা ঠিক ততটা পূরণ হয়নি, যদিও একথা অনস্বীকার্য যে উচ্চ নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠানে ‘নিরাপত্তা সংস্কৃতি’র ধারণা এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত এবং বিশ্বের বহু প্রতিষ্ঠান ‘নিরাপত্তা সংস্কৃতি’ মেনে চলে। বিশেষজ্ঞরা যুক্তি দেন যে যখন কেউ ‘নিরাপত্তা সংস্কৃতি’ বিষয়ে কথা বলেন, মনে হয় যেন ‘নিরাপত্তা সংস্কৃতি’ একটি স্বতন্ত্র সত্তা। যা কোনো দেশের বা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান সংস্কৃতিতে আমদানি করা বা চাপিয়ে দেয়া যেতে পারে। বাস্তবিক অর্থে, যেহেতু কোনো সংস্কৃতি অন্য কোনো সংস্কৃতিতে হুবহু আমদানি করা যায় না। তাই ‘নিরাপত্তা সংস্কৃতি’ নিজস্ব মূল্যবোধ থেকেই তৈরি করতে হবে।
নিরাপত্তা বিষয়ক মূল্যবোধ ভিন্ন আঙ্গিকে দেখা হয় ‘কালচার ফর সেফটি’, ধারণায় যেখানে নতুন করে কালচার সৃষ্টির কথা না বলে অবিরামভাবে নিরাপত্তায় উন্নতি করার জন্য বিদ্যমান সংস্কৃতির বিভিন্ন স্তরে অবস্থিত উপাদানগুলো সুবিন্যস্ত করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা মত দেন যে ‘কালচার ফর সেফটি’ ধারণার দৃষ্টি ভঙ্গি কালচার অনুধাবন তত্ত্বের সঙ্গে অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বাংলাদেশে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। এখানের ‘নিরাপত্তা সংস্কৃতি’ নিয়ে কিছু বলেন।
– আমরা জানি, বাংলাদেশে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। সম্প্রতি ফার্স্ট কংক্রিট পোরিং (এফসিপি) বা প্রথম ঢালাই উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এর মূল পর্বের নির্মান কাজও শুরু হয়েছে। আশা করি সময়মতো এর কাজ সফলভাবে শেষ হবে। বাংলাদেশ এক নতুন মর্যাদার আসনে আসীন হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে কাঙ্খিত আর্থ-প্রাযুক্তিক উন্নয়ন সাধিত হবে এ আমার একান্ত আশা। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এদেশের অন্যান্য উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ থেকে বিচ্ছিন্ন কোন বিষয় নয়, এক বিশেষ অংশমাত্র। বাংলাদেশে কালচার ফর সেফটি বিষয়ক সুনির্দিষ্ট গবেষণালব্ধ কোন তথ্য-উপাত্তের কথা আমার জানা নেই। বাংলাদেশের জনসাধারণের মধ্যে নিরাপত্তা মূল্যবোধ কতোটা স্বভাবজাত এবং বিশ্বাসের গভীরে প্রোথিত তা আপনি যতোটা অনুধাবন করেন, আমিও হয়তো ততোটাই ধারণা করি মাত্র। এইপ্রেক্ষিতে আমাদের প্রত্যেকের আত্মজিজ্ঞাসা হোক আমাদের বিদ্যমান সংস্কৃতির মধ্যে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে আমরা কতটা নিরাপত্তা সচেতন আমাদের প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা শিল্প, নিজস্ব মূল্যবোধ ও মৌলিক ধ্যান ধারণাগুলো নিরাপত্তা মূল্যবোধের সাথে কতটা সুবিন্যস্ত! আত্মজিজ্ঞাসার গুরুত্ব অনুধাবনের যোগ সূত্রে নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী প্রফেসর এইচডাব্লিউক্রোটোর এক অটোগ্রাফের উদ্ধৃতি আমি প্রায়সই দিয়ে থাকি। তিনি তাঁর এক অটোগ্রাফে লিখেছিলেন, ’আমি উত্তর দিতে পারছি না, কিন্তু প্রশ্ন বুঝতে পেরেছি।’ সমষ্টিগত, ব্যক্তিগত, বস্তুগত এবং পরিবেশগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের প্রত্যেকের ভূমিকা ও দায়বদ্ধতা অনস্বীকার্য।
বাংলাদেশে নিরাপত্তা সংস্কৃতি নিয়ে কী কোন গবেষণা করছেন বা করার আগ্রহ আপনার আছে?
-অবশ্যই। আমি আগেই বলেছি, ‘কালচার ফর সেফটি’ আমার অত্যন্ত আগ্রহের বিষয়। ইন্টারন্যাশনাল এ্যটোমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)-এর একটি কোঅর্ডিনেটেড রিসার্চ প্রোজেক্টের আওতায় ’ বাংলাদেশের পারমাণবিক ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা নিরাপত্তার জন্য সংস্কৃতি, সাংগঠনিক সংস্কৃতি এবং মানুষের কর্মক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন বিষয়’ শিরোনামে গবেষণা করছি। আমার সাথে ড. মো. দুলাল হোসেন সহ আরও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। আশা করছি আগামী ১৮-২০ মাসের মধ্যে গবেষণার বড় অংশ শেষ হবে।
সেই গবেষণা থেকে আমরা নিশ্চয় আমাদের আচরণ বিষয়ক নতুন কিছু পাব।
– আমাদের চেষ্টার কমতি থাকবে না।
ধন্যবাদ আপনাকে।
– আপনাকেও ধন্যবাদ।