পরমানু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় বাংলাদেশে দক্ষ জনবল নেই
বাংলাদেশে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় দক্ষ জনবল প্রয়োজন। অথচ এ নিয়ে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য আলোচনা হচ্ছে না। পাবনার রুপপুরে রাশিয়ার সহায়তায় যে ১২’শ মেগাওয়াটের দুটি মোট ২ হাজার ৪’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে এটি পরিচালনার জন্য যে লোকবল বা জনসম্পদের প্রয়োজন হবে তা বাংলাদেশে নেই। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী পরমানু বিষয়ে পড়াশুনা শেষ করে বের হচ্ছে। ফলে যেসময় বাংলাদেশে পরমানু বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে সেসময় শিক্ষিত জনবল বাংলাদেশের থাকবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে রাশিয়ার পরমানু বিষয়ে প্রকাশিত ওয়েব পোর্টাল ‘নিউক্লিয়ার’ এর সঙ্গে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। নিউক্লিয়ার এর সাংবাদিক লিলিয়া প্লাতোনোভ পরমানু বিষয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহিদ হাসান মাহমুদ, নিউক্লিয়ার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম।
লিলিয়া প্লাতোনোভ বলেন, জাপানে যে পরমাণু দূর্ঘটনা ঘটেছে সেই কেন্দ্রটি ছিলো ৪৩ বছরের পুরানো। ওই প্রযুক্তিও ছিলো সেকেলে। বর্তমানে রাশিয়াতে যেসব পরমাণু তৈরী হচ্ছে তা আগামি দিনের এসব সমস্যার কথা ভেবেই করা হচ্ছে। এখানে নিরাপত্তার বিষয়টি প্রথমে রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাশিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র রপ্তানিতে এখন পৃথিবীতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কারণ একটি ফ্রান্সের কেন্দ্র বানাতে যেখানে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হচ্ছে সেখানে রাশিয়া ১২ থেকে ১৪ বিলিয়নের মধ্যে কেন্দ্র নির্মাণ করে দিচ্ছে। সে জন্য রাশিয়া চীন, ভারত, ইরান, চেক রিপাবলিক, ভিয়েতনাম, ব্রাজিল সহ সারা পৃথিবীতে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র রপ্তানি করছে। বাংলাদেশে কোন প্রযুক্তির পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র রাশিয়া থেকে আনবে এমন আলোচনার প্রেক্ষিতে লিলিয়া বলেন, ভিভিআর ১২০০ মডেলের কেন্দ্র বাংলাদেশ রাশিয়ার কাছ থেকে কিনতে যাচ্ছে। ভিভিআর মডেলটি অত্যান্ত নিরাপদ। সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে এই মডেলটি তৈরি হয়েছিলো। প্রতিনিয়ত এটি উৎকর্ষ হচ্ছে। বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ৭০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র এ মডেলের রয়েছে আর খোদ রাশিয়াতে রয়েছে ২০টি কেন্দ্র।
জাহিদ হাসান মাহমুদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিউক্লিয়ার সায়েন্স বিভাগ প্রতি বছর ১০০ শিক্ষার্থীকে ভর্তী করে। কিন্তু একটি ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য কম করে হলেও ৯০০ দক্ষ জনসম্পদ দরকার। সরকারকে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য দক্ষ জনসম্পদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবার অনুরোধ করেন তিনি।