পরিবেশ দূষণ: দিল্লিতে পাঁচ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ
ইবি ডেস্ক:
বায়ুদূষণ কমাতে দিল্লির আশপাশ এলাকার পাঁচটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বায়ুদূষণ নিয়ে ভারতের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের একটি প্যানেল এসব কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখার আদেশ দেয়।
জরুরি নয় এমন সব পণ্য বহনকারী ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি দিল্লি ও আশপাশের শহরে সব ধরনের নির্মাণকাজও বন্ধ করার আদেশ দিয়েছে দ্য কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট। বাতাসের মান যেন আরও খারাপ না হয় সেজন্য এসব পদক্ষেপ নেয়া জরুরি ছিল বলে জানানো হয়েছে।
একিউআইয়ের তথ্যমতে ২০২০ সালে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানীগুলোর একটি নির্বাচিত হয় দিল্লি। চলতি মাসেও দিল্লিতে দূষণের মাত্রা অনেক। গত কয়েকদিন প্রায় প্রতিদিন সেখানে বাতাসে ছোট ছোট বস্তুকণার পরিমাণ দেখা গেছে প্রতি ঘনমিটারে ৪৯৯। দীপাবলির পরের দিনে সংখ্যাটা পৌঁছেছিল ৯৯৯-এর ঘরে। ফলে সুস্থ মানুষও শ্বাসপ্রশ্বাসের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিল্লির বাতাসে শ্বাস নেয়ার মানে একদিনে ২০টি সিগারেট পান করা। শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে শিশু ভর্তির সংখ্যাও বাড়ছে।
তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি শহরের বাইরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া ও খোলা জায়গায় আবর্জনা পোড়ানোর কারণে মারাত্মক দূষণের পড়ে শহরটি। এ সময়ে বাতাসে পিএম ২.৫ নামে পরিচিত সূক্ষ্ম কণার ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। এ কণা এতই ছোট যে শ্বাস নেয়ার সময় ফুসফুস থেকে রক্তের প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে।
দুই কোটি জনসংখ্যার এ শহরের দূষণ কমাতে ব্যর্থতার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকেও তিরস্কার করেন আদালত। পরিস্থিতি সামাল দিতে এক সপ্তাহের জন্য স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নভেম্বর পর্যন্ত ৫০ শতাংশ সরকারি চাকরিজীবীর বাড়ি থেকে কাজ করার কথাও বলা হয়েছে।
চলতি মাসে দিল্লির বায়ুমান সূচক ৫০০ মানের একটি স্কেলে ৪৯৯ পর্যন্ত উঠেছিল। অর্থাৎ দূষণের মাত্রা ‘গুরুতর’ পর্যায়ে ছিল। এমন পরিস্থিতিতে শহরটির স্বাস্থ্যবান বাসিন্দারাও শ্বাসতন্ত্রের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।
দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানীগুলোর অন্যতম। প্রতি বছর শীতে তামপাত্রা হ্রাস পাওয়ার পর শহরটি ধোঁয়াশায় ঢাকা পড়ে। নিম্ন তাপমাত্রায় শহরের আশপাশের কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে আসা মারাত্মক দূষণকারী কণা, যানবাহন ও আবর্জনা পোড়ানোর ধোঁয়া আটকা পড়ে এই ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়।