পাবর্ত্য অঞ্চলে যৌথভাবে তেল গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাপেক্স

পাবর্ত্য চট্টগ্রামে তেল গ্যাস অনুসল্পব্দান ও উত্তোলন করতে যাচ্ছে বাপেক্স। তবে একা নয়। বিদেশী কোন কোম্পানিকে সাথে নিয়ে করবে। বিদেশী কোম্পানির সাথে উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) করা হবে না। যৌথ অংশীদারের ভিত্তিতে করা হবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) সূত্র জানায়, পাবর্ত্য অঞ্চলে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক চারটি প্রতিষ্ঠান যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আগ্রহী কোম্পানিগুলোর সাথে আলোচনা চলছে। তবে কোন পদ্ধতিতে যৌথভাবে এই বিনিয়োগ হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। বাপেক্সের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ অংশ রেখে একটি কোম্পানি গঠন করা হতে পারে। সেই কোম্পানিকে দিয়ে পাবর্ত্য এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধান করা হবে।
বাপেক্সের একজন কর্মকর্তা জানান, গত সোমবার তিনটি কোম্পানী তাদের প্রস্তাবনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে। একটি কোম্পানী আগামী ১৪ আগস্ট পর্যন্ত সময় চেয়েছে।
বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতিকুজ্জামান বলেন, পার্বত্য এলাকার চারটি স্থানে  যৌথভাবে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে বাপেক্সের অভিজ্ঞতা বাড়বে। সাথে দেশের স্বার্থও রক্ষা হবে।
চলতি বছরের ২০ এপ্রিল ২২ নম্বর গ্যাসক্ষেত্রের অন্তভূক্ত চট্টগ্রাম ও পাবর্ত্য চট্টগ্রামের পটিয়া, জলদি, কাসালং ও সীতাপাহাড়ে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আগ্রহপত্র (ইওআই) আহবান করা হয়। ইওআই দাখিলের শেষ দিন ছিল ২৮ মে। পরে সময় বাড়ানো হয়।
ইওআই দাখিল করা চারটি কোম্পানী হচ্ছে চিনের সিএনপিসি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, যৌথভাবে চিনের  জিও-জেএডিই পেট্রোলিয়াম করপোরশেন ও লং উড রিসোর্সেস কনর্সোডিয়াম, যুক্তরাষ্ট্রের আইপিআর ট্রান্স অয়েল করপোরশেন, এবং চিনের সিটিক ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিং লিমিটেড। এরমধ্যে জিও-জেএডিই পেট্রোলিয়াম করপোরশেন ১৪ আগস্ট ব্যাখ্যা দেবে।
বাপেক্সের জিওলজিক্যাল বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন,  চারটি কোম্পানীর প্রস্তাব যাচাই বাছাই শেষে এসব কোম্পানির কাছে আর্থিক প্রস্তাব চাওয়া হবে।
২০১২ সালের শেষে বাপেক্স পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে যৌথভাবে কাজ করার জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় কোম্পানির কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করে। পরের বছর জানুয়ারিতে রাশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভারত ও চিনের রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানি আগ্রহ দেখায়। এরমধ্যে চিনের সিনোপ্যাক সাংহাই কোম্পানীর সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু নানা কারণে সেই আলোচনা আর এগোয়নি। পরে চলতি বছর আবারও আগ্রহপত্র আহবান করে বাপেক্স।
এরআগেও এই ক্ষেত্রে গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা যায় নি। প্রায় ১৪ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার এই ক্ষেত্রে অনুসন্ধানের জন্য ১৯৯৭ সালে মার্কিন কোম্পানি ইউনাইটেড মেরিডিয়ান করপোরেশনের (ইউএমসি) সঙ্গে উৎপাদন বন্টন চুক্তি করা হয়। পরে তারা এই ক্ষেত্রটি আরেক মার্কিন কোম্পানি ওশেন এনার্জির কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু তারাও অনুসন্ধান কাজ করেনি। পরে ২০০৬ সালে সরকার ক্ষেত্রটি বাপেক্সকে দেয়।