পারদ দূষণের ঝুঁকিতে সুন্দরবন
রামপালে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সময় ছাই মজুদ করে রাখা হবে। সেই ছাই থেকে নির্গত পারদ জলে-স্থলে মিশে সুন্দরবন এলাকার জীববৈচিত্র্য ঝুঁকির মুখে ফেলবে। এই পারদ নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার জরুরি। গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
নিউইয়র্কের সিরাকাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগের অধ্যাপক চার্লস টি ড্রিসকল ‘সুন্দরবনের জীব ভৌগলিক বলয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত পারদের প্রভাব’ নিয়ে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম।
অন্যদের মধ্যে কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুল মতিন, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নাজমুন নাহার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এমএম আকাশ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রামপালে প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পারদ নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে কোনো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে না বলে সন্নিহিত অঞ্চল পারদ দূষণের বড় ঝুঁকি বহন করবে। পাখি, সরীসৃপ ও বাঘসহ এ অঞ্চলের যেসব বন্যপ্রাণী মাছ খায়, সেগুলো পারদ দূষণের হুমকির মুখে পড়বে। একই কারণে ওই এলাকার মানুষরাও পারদ দূষণের শিকার হবে। জ্বালানির মধ্যে কয়লা বায়ুমণ্ডলে পারদ জমানোর বড় উৎস। এটি বায়ুমণ্ডল থেকে ভূমিতে মিশে শতাব্দীব্যাপী টিকে থাকে। এই পারদ সহজেই জলজ ও স্থল প্রাণীকূলের মাধ্যমে মানবদেহে সঞ্চিত হতে পারে।
এই গবেষণায় রামপাল প্রকল্পের দরপত্র, ওই স্থানের বৃষ্টিপাত, মাটির ও নদীর বৈশিষ্ট্য, বাতাসের প্রবাহ, গতিবেগসহ এক বছরের নানা ধরনের তথ্য-উপাত্ত বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বলে বদরুল ইমাম জানান।