পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে ঐতিহাসিক চুক্তি

অবশেষে বাংলাদেশ পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে রাশিয়ার সাথে ঐতিহাসিক চুক্তি করল। বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ প্রকল্প এটি। পদ্মা সেতুর তিনগুণ বেশি বিনিয়োগ হবে এখানে।
শুক্রবার হোটেল সোনারগাঁও-এ এই ঐতিহাসিক চুক্তি হয়েছে। পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সাথে চুক্তি করল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠান জেএসসি এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির সাভুসকিন চুক্তিপত্রে সই করেন।

রাশিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে ১৩ দফা আলোচনার ভিত্তিতে ৪৭টি অনুচ্ছেদ এবং ৫৭৩টি উপ-অনুচ্ছেদে চুক্তিটি চূড়ান্ত করা হয়।

rooppur-deal

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অন্যদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম,পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সজান্ডার এ নিকোলায়েভ সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সহযোগিতায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রথম অবস্থায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা থাকলেও এখন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ইউনিটে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
তিনি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম বর্জ্য অনেকখানি নিরাপত্তার সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশের জন্য কঠিন এ কাজটির দায়িত্ব নিয়েছে রাশিয়া। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা করেন।

চুক্তি অনুযায়ী ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার (১ লাখ এক হাজার কোটি টাকা) ব্যয়ে এ কেন্দ্র নির্মাণ করবে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানটি। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে সাত বছর।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। এরপর শুরু হবে মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ।

২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত আগস্ট মাসে পাবনার রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় কোম্পানি গঠন করতে সংসদে বিল পাস হয়। আইন অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকানা থাকবে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের হাতে। আর কেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্ব পাবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি বাংলাদেশ’।