পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুনর্বাসন ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার পটুয়াখালিতে প্রধানমন্ত্রী এই পুনর্বাসন উদ্বোধন করেন।
যাদের জমি অধিগ্রহণ করে এই কেন্দ্র করা হচ্ছে তাদের হাতে বাড়ির চাবি ও দলিল তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী এসময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকায় বিপ্লবী পরিবর্তন আনবে। বিদ্যুৎকেন্দ্র এই অঞ্চলের মানুষের সুন্দর জীবনের দরজা খুলে দেবে। গত ১০ বছরে সরকার ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে বলেও তিনি জানান। দ্রুত এই কাজ শেষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ঠদের ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সারাদেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। এর ফলে বাংলাদেশের মানুষ সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবে। দেশের মানুষ আর কষ্ট করবে না। তাদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এই এলাকায় এলএনজি টার্মিনাল করে দেব। যাতে এলএনজি শিল্পখাতসহ অন্যান্য খাতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেব।
আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। উন্নয়নের কারণে কোনো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত যেন না হয়, গৃহহীন না হয়ে পড়ে সেদিকে লক্ষ রেখেছি। এই এলাকায় ১৩০ পরিবারের জন্য ঘর তৈরি করে দিয়েছি। পরিবারগুলোতে ক্ষতিপূরণ দিয়েছি তো বটেই, ঘরও তৈরি করেছি। যাতে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী ২০২০ সালের ১৭ মার্চ। ২০২০-২১ কে আমরা মুজিববর্ষ ঘোষণা দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হবে।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এখানে ১৩০ পরিবারের জন্য নতুন শহর করা হয়েছে। শহরের নাম দেয়া হয়েছে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’। এখানে আছে স্কুল, মাঠ, মসজিদ, কবরস্থান। অফিসসহ কমিউনিটি সেন্টার, কমিউনিটি ক্লিনিক ও কাঁচাবাজার। দুটো পুকুর আর ৪৮টা টিউবওয়েল। দেয়া হয়েছে প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ। স্বপ্নের ঠিকানায় ঢোকার শুরুতেই আছে দৃষ্টিনন্দন সড়ক। এছাড়া আবাসন এলাকায় সুন্দর রাস্তা ও ড্রেন করা হয়েছে।
এখানে দুই ধরণের বাড়ি করা হয়েছে। ছয় শতাংশ জমিসহ এক হাজার বর্গফুটের ৪৮টা বাড়ি। আর আট শতাংশ জমিসহ এক হাজার ২০০ বর্গফুটের ৮২টা বাড়ি। বাড়িগুলো আধাপাকা। পাকাবাড়ি কিন্তু টিনের ছাউনি।
বাংলাদশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (বিসিপিসিএিল) এখানে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছ। আমদানি করা কয়লা দিয়ে এই কেন্দ্র হবে।
নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল), বাংলাদেশ এবং চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি) এর যৌথ উদ্যোগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি গঠন করে।
এছাড়া এছাড়া এই কোম্পানি এখানে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও একটা কেন্দ্রর কাজ বাস্তবায়নাধীন আছে। আমদানি করা তরল গ্যাস দিয়ে এই কেন্দ্র হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে ৯৯৮ দশমিক ৭৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।