প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণ করুন: প্রধানমন্ত্রী

কৃষি জমি রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের অর্থনীতিকে আমরা গ্রাম থেকে উন্নত করতে চাই। শহরে ফ্ল্যাট হবে, বিল্ডিং হবে আর গ্রাম পড়ে থাকবে, গ্রামের মানুষ কুঁড়ে ঘরে থাকবে এটা যেন না হয়।
তিনি বলেন, আমরা যখন সরকার গঠন করি তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, একটা মানুষও কুঁড়ে ঘরে থাকবে না।
স্থাপনা নির্মাণে নান্দনিকতার পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশের দিকে নজর দিতে স্থপতিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি জমি সাশ্রয়ের বিষয়টিও মাথায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
রোববার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো কাজ করতে গেলে আগে মাথায় রাখতে হবে জমির স্বল্পতা, জমির সাশ্রয় করতে হবে। একটা দেশের আবহাওয়া, জলবায়ু, পরিবেশ সব কিছু মাথায় রেখেই কিন্তু স্থাপনা হওয়া উচিৎ।
স্থপতিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যখন পরিকল্পনা করা হয় তখন আপনারা লক্ষ রাখবেন খাল, নদী ভরাট না করে কীভাবে করা যায়। সেদিকে যদি দৃষ্টি দেন তাহলে সত্যিই দেশটা রক্ষা পেতে পারে। পরিবেশবান্ধব হতে পারে।
বহুতল ভবন নির্মাণের সময় অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা এবং হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে গুরুত্ব দিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিটিশ আমলে গড়ে ওঠা ‘সব লাল দালান রাখতে হবে’ বলে মনে করেন না শেখ হাসিনা। এর বদলে ‘স্থাপত্য ও ঐতিহাসিক মূল্য আছে’ এমন ভবন রক্ষার কথা বলেন তিনি।
প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণ করুন: প্রধানমন্ত্রীপ্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুন্ন রেখে এবং ফসলি জমি রক্ষা করে অবকাঠামো নির্মাণ হবে; পাশাপাশি দেখতেও সুন্দর হবে।
জমির স্বল্পতার কথা মাথায় রেখে গ্রামের মানুষদের জন্য বহুতল ভবন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে আগে অনেক খাল, নদী ও পুকুর ছিল। একেক সময় একেকটা ডিক্টেটর এসেছে; তদের কেন যেন গাছ, নদী, পানির ওপর কেমন যেন একটা বৈরিতা থাকে। এটা আমি সব সময় দেখেছি।
মতিঝিলের ঝিল ভরাট, পান্থপথের খাল বন্ধ করে বক্স কালভার্ট নির্মাণ এবং গুলশান ও ধানমন্ডি লেকে ‘ভরাট ও দখল’-এর কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তার সরকার আমলে জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের বিরোধিতার প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, মিন্টো রোডে একটি পুকুর ভরাট করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ভবন করার প্রস্তাব এলে তা নাকচ করে দিয়েছিলেন তিনি।
দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী স্থপতিদের উদ্দেশে বলেন, ভবিষ্যতের শহর গড়ে উঠবে, সে পরিকল্পনা এখন থেকেই করতে হবে।
নতুন শহর গড়ে উঠলে সেখানে যাতে নদী দূষণ এড়ানো যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি আবু সাঈদ এম আহমদ ও মহাসচিব কাজি এম আরিফ বক্তব্য দেন।