প্রাচীন সভ্যতার ‘বিশাল’ বিস্ময় দেখা গেল মহাকাশ থেকে!

হাজার হাজার বছর ধরে এই বিশ্বে যা চোখের আড়ালে ছিল, তা নজরে এল মহাবিশ্বে গিয়ে!

পৃথিবীর বহু প্রাচীন সভ্যতার বিচিত্র কারুকাজের সন্ধান পেল বহু দূরে মহাকাশে নাসার পাঠানো উপগ্রহের টেলিস্কোপ!

হারানো সভ্যতার সেই চোখ-ধাঁধানো কারুকাজের হদিশ মিলল কাজাখস্তানে। যেগুলি কম করে আট হাজার বছরেরও বেশি পুরনো।

মহাকাশ থেকে নাসার টেলিস্কোপের নজরে এল প্রাচীন সভ্যতার কোন কোন কারুকাজ?

সরল রেখা, বৃত্ত, ত্রিকোণ, চতুষ্কোণ, বর্গক্ষেত্র, আয়তক্ষেত্র, রম্বাস! ছোট বেলায় আমাদের শেখা প্রায় সব জ্যামিতিক চিত্রই।

এখানেই চমকের শেষ নয়। ওই জ্যামিতিক চিত্রগুলি রয়েছে কয়েকশো কি হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। কোথাও আবার সেগুলি এক একটা আন্তর্জাতিক মাপের ফুটবল মাঠের মতো। জ্যামিতিক চিত্রগুলি অতটা এলাকা জুড়ে না থাকলে তো তাদের অত দূরে মহাকাশ থেকে দেখাই যেত না! নিল আর্মস্ট্রং যেমন চাঁদে গিয়ে চিনের প্রাচীর আর এভারেস্টের চুড়ো দেখেছিলেন, ঠিক তেমনই মহাকাশ থেকে ওই জ্যামিতিক চিত্রগুলিকে দেখতে পেয়েছে নাসার উপগ্রহের টেলিস্কোপ।

এ ধরনের জ্যামিতিক কারুকাজের একটি বিশেষ নাম রয়েছে। ‘জিওগ্লিফ্‌স’। মাটির ওপর খোদাই করা জ্যামিতিক চিত্রাবলী। কোথাও কোথাও বানানো হয়েছে মাটির স্তুপ। অনেকটা পিরামিডের মতো। উত্তর কাজাখস্তানের তুর্গাই এলাকায় এমন অন্তত ২৬০টি ‘জিওগ্লিফ্‌সে’র হদিশ পেয়েছে নাসার উপগ্রহ।

কিন্তু এত দিন সেগুলির হদিশ কেন পাননি প্রত্নতত্ত্ব বা পুরাতত্ত্ববিদরা? কেন তা নজরে পড়েনি ভূতাত্ত্বিকদের?

নাসা তার দু’টি কারণ দেখিয়েছে। এক, যে এলাকা জুড়ে ওই সুবিশাল জ্যামিতিক চিত্রগুলি ছড়িয়ে রয়েছে, তা কিছু দিন আগেও ছিল গভীর বনাঞ্চল। হালে সেই বন কেটে ফেলা হয়েছিল বসতি গড়ে তোলার তাগিদে। তাই ওই জ্যামিতিক চিত্রগুলিকে এখন দেখা যাচ্ছে। দুই, চিত্রগুলি এতটাই বিশাল যে, কোথাও তার একাংশ দেখা গেলে, তার থেকে সেটা ত্রিভূজ না কি বর্গক্ষেত্র তা বুঝে ওঠা সম্ভব নয়। একমাত্র মহাকাশ থেকেই যাদের সার্বিক চেহারাটা বোঝা সম্ভব হয়।

২০০৭ সালে এক বার কাজাখস্তানের অর্থনীতিবিদ ও শখের পুরাতত্ত্ববিদ দিমিত্রি দে’র নজরে পড়েছিল ওই সব জ্যামিতিক চিত্রের কিছু কিছু অংশ। কিন্তু তিনি তখন এই সবের মাথামুন্ডু বুঝতে পারেননি।