প্রিন্সেসের নতুন সংসার

নতুন সংসার পেতে প্রিন্সেস মা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ওর ডিম থেকে একটি ছানা ফুটেছে। তবে প্রিন্স নয়, এ যাত্রায় ওর জীবনসঙ্গী ছিল আলেকজান্ডার।
খুবই দুর্লভ এক জোড়া ম্যাকাও প্রজাতির পাখি প্রিন্স ও প্রিন্সেস। ওদের সংসার ভেঙে যাওয়ার কাহিনি রূপকথার গল্পের মতোই। পাখি দুটির মালিক ছিলেন দুজন। মালিকানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভেঙে যায় ম্যাকাও দম্পতির সুখের সংসার।
ঘটনাক্রমে মিলন ঘটেছিল ওদের। সুখের সংসারে ঝামেলা শুরুর পর এ নিয়ে গত বছরের ৭ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘ও পাখি তুই কান্দিস না’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। দুই মালিক ছিলেন অনড় অবস্থানে। আদালতের নির্দেশে দুই মালিকের কাছে চলে যায় দুটি পাখি।
গত ৩ জানুয়ারির পর থেকেই প্রিন্স ও প্রিন্সেস আলাদা থাকছে। প্রিন্স থাকছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়, প্রিন্সেস থাকছে হাতিরপুল এলাকার মিনি চিড়িয়াখানায়। দুই মালিকই চেষ্টা করেছেন নিজের পাখির বিপরীত লিঙ্গ বিদেশ থেকে এনে জোড়া বাঁধতে। মেয়ে পাখি প্রিন্সেসের মালিক আবদুল ওয়াদুদ বিদেশ থেকে আরেকটি পুরুষ পাখি জোগাড় করে আনেন। ওর নাম দেওয়া হয় আলেকজান্ডার।
আবদুল ওয়াদুদ জানান, প্রথমে সংসার পাততে চায়নি প্রিন্সেস ও আলেকজান্ডার দম্পতি। বেশ কয়েক মাস ঝগড়াঝাঁটির পর ওরা জোড় বাঁধে।
ঘটনার শুরু ২০১০ সালে। বিদেশে অবস্থান এবং বাড়ি বদল করায় ইকরাম সেলিম তাঁর পাখিটি আবদুল ওয়াদুদকে দেন। ওয়াদুদ সেই পাখিটির সঙ্গী খুঁজে আনেন ব্রাজিল থেকে। নাম রাখেন প্রিন্স। তিন বছরের সুখের সংসারে চারবারে ওই দম্পতির সাতটি বাচ্চা হয়। আবদুল ওয়াদুদ এগুলোর একক মালিক হন। তিন বছর পর ইকরাম সেলিম দেশে ফিরে প্রিন্সকে ফেরত চান। আপত্তি তোলেন আবদুল ওয়াদুদ। এরপর থানায় দুপক্ষের সাধারণ ডায়েরি ও মামলার জের ধরে পাখি দম্পতির বিচ্ছেদ ঘটে।
রং, রূপ সৌন্দর্যের জন্য ম্যাকাও পৃথিবীজুড়ে পাখিপ্রেমিকদের আকৃষ্ট করে। এদের আয়ু ষাট থেকে সত্তর বছর। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান অববাহিকার গভীর জঙ্গলের পাখি ম্যাকাও বড় বড় পাইনগাছে বাসা বাঁধে।
গত বছর জুনে আলেকজান্ডারের সঙ্গী হওয়ার পর পাঁচবারে মোট ১৩টি ডিম দেয়। কিন্তু ডিম থেকে একটি বাচ্চাও ফোটেনি। বাসার মধ্যে অধিকতর আরামদায়ক ও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করায় ষষ্ঠবারে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটল।
আবদুল ওয়াদুদ জানান, প্রিন্সেস যেহেতু সঙ্গী খুঁজে পেয়েছে, সংসার হয়েছে, বাচ্চা দিয়েছে তাই আর আইনি লড়াই করবেন না।
ইকরাম সেলিম জানান, প্রিন্স ভালো আছে। তার জন্য জোড়া আনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অনুমতি পাননি।