বন্যা: সিলেট নগরে বিদ্যুৎহীন ৫০ হাজার পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক/বিডিনিউজ:
বন্যার পানিতে তলিয়ে সিলেটে প্রায় ৫০ হাজার পরিবার বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। বিদ্যুতের অনেক উপকেন্দ্র তলিয়ে গেছে। বাসা-বাড়িতে বৈদ্যুতিক মিটারে পানি উঠেছে।
পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে।
দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা আলম আহমদ বলেন, বন্যার পানিতে ঘরে আটকে আছি, তার ওপর বিদ্যুৎ নেই। মোবাইল ফোনও চার্জ দিতে পারছি না। ফলে জরুরি প্রয়োজনে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করাও যাচ্ছে না। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির জানান, দক্ষিণ সুরমা, উপশহরসহ কয়েকটি এলাকার বিদ্যুতের উপকেন্দ্র পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। জলাবদ্ধতা দীর্ঘায়িত হতে থাকায় খুব শীঘ্রই এসব এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। পানি না কমলে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে না।
বিদুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, কয়েকদিনে নগরীর ৫০ হাজারের বেশি গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দা দৈনন্দিন ব্যবহার্য ও খাবার পানির সংকটে রয়েছেন।
বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় দক্ষিণ সুরমার এলাকার বাসিন্দারা। সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ের প্রায় সব এলাকায় বন্যা কবলিত ও জলাবদ্ধ হয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সিলেট বিদ্যুৎ বিভাগের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শ্যামল চন্দ্র সরকার জানান, দক্ষিণ সুরমা উপকেন্দ্রের অধীনে সব এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। দক্ষিণ সুরমার পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর অধীনে থাকা শাহজালাল উপশহর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
শাহজালাল উপশহরের ই ব্লকের বাসিন্দা আশরাফ আহমদ বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বিদুৎ নেই। তাই খাবার পানির সংকটে পড়েছি। কবে বিদুৎ আসবে কেউ বলতে পারছে না।
বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন বলেন, উপশহরের প্রায় সব বাসার বিদ্যুতের মিটার নিচতলায়। এসবই এখন পানির নিচে। এ অবস্থায় কোনোভাবেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে না।
এ ছাড়া বসতঘরে পানি ওঠায় কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, সদর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বেশির ভাগ এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।