বরিশালে পুরনো ট্রান্সফরমার নিয়ে বিপাকে ওজোপাডিকো
নগরীর ৬০ হাজার গ্রাহকের চাপ নিতে হিমশিম খাচ্ছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) দুটি বিভাগ। বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাপের কারণে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকার ট্রান্সফরমার অচল হয়ে পড়ায় বিক্ষুব্ধ নগরবাসীর রোষানলে পড়ছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ অবস্থায় দুটি ট্রলি ট্রান্সফরমার দিয়ে কিছু কিছু এলাকা সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হলেও সামনে রোজার শুরুর পর অতিরিক্ত ট্রান্সফরমার হাতে না থাকলে বড় ধরনের জনরোষের সৃষ্টি হতে পারে। এ আশঙ্কা করছেন খোদ বিদ্যুৎ বিভাগ।
বরিশাল নগরীতে ওজোপাডিকো-১ ও ওজোপাডিকো-২ এর আওতায় গ্রাহক রয়েছে ৬০ হাজার। আর ৬০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ওজোপাডিকো-১ ও ২’র অধীন ট্রান্সফরমার রয়েছে মাত্র ৪০০টি। এর অধিকাংশ ট্রান্সফরমার ৩০ বছরের বেশি পুরনো হওয়ায় বেশি লোড পড়লেই ট্রান্সফরমার থেকে আগুন বের হয়ে তা অচল হয়ে পড়ে। এতে দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে ওই ট্রান্সফরমার অধীন গ্রাহকদের। এ সময় গ্রাহকরা ফোন করে অতিষ্ঠ করে তুলছেন ওজোপাডিকোর কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কর্মচারীদের। এরপরও বিদ্যুৎ দিতে বিলম্ব হলে সেখানে বিক্ষোভ শুরু করে নগরবাসী।
ওজোপাডিকোর মাঠ পর্যায়ে কর্মরতরা জানান, একটি ট্রান্সফরমার অচল হলে তা ঠিক করতে দেড় মাস সময় লাগে। অথচ বিকল্প কোনো ট্রান্সফরমার তাদের হাতে নেই। যে সব এলাকায় বিদ্যুতের চাপ কম আছে সেখান থেকে ট্রান্সফরমার এনে তা বসিয়ে দেয়া হয়। অথবা ট্রলি ট্রান্সফরমার দিয়ে কোনোভাবে সামাল দেয়া হচ্ছে নগরীকে। কিন্তু এভাবে বেশিদিন চলা সম্ভব হবে না। সামনে রোজার মধ্যে এভাবে ট্রান্সফরমার বিকল হলে কিছুই করণীয় থাকবে না। ওই সময় গ্রাহকদের জনরোষ থেকে রক্ষা পেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অতিরিক্ত ট্রান্সফরমার সরবরাহে বারবার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ওজোপাডিকোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সেলিম জানান, প্রতিনিয়ত নগরীতে গ্রাহকের চাপ বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে লিফট, এসি, এয়ারকুলার, বিদ্যুতের চুলা থেকে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিকস জিনিসপত্রও। এ জন্য অধিক লোড নিতে পারে এ ধরনের ট্রান্সফরমার সরবরাহ এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে ওজোপাডিকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তালুকদার আবু জানান, ট্রান্সফরমারগুলো পুরনো হলেও বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার হলে বিকল হবার কথা নয়। সমস্যা হলো, যে পরিমাণ লোড নিতে পারে তার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে নগরীতে। তাছাড়া অনেক বাসায়ই কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই লাগানো হয়েছে এয়ারকুলার। নিয়ম রয়েছে ট্রান্সফরমার যে লোড নিতে পারে তার চেয়ে ২০ ভাগ কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। কিন্তু এখন অতিরিক্ত গরমের কারণে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। ফলে ট্রান্সফরমার একের পর এক বিকল হচ্ছে।