বাঁশখালিতেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে কিনা শুক্রবার সিদ্ধান্ত

চট্টগ্রামের বাঁশখালিতেই এস আলম গ্রুপের ১২২৪ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন অনিশ্চয়তায় পড়েছে। আপাতত বাঁশখালিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সকল কার্যক্রম বন্ধ আছে।
চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় এই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে যাবেন এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। গ্রামবাসি চাইলে সেখানেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে চান তারা।

বৃহষ্পতিবার এক কর্মশালা শেষে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আমরা বিদ্যুৎ কিনবো। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা আমাদের নয়। পরিবেশের সঙ্গে সমন্বয় করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখে সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া হবে। কেন্দ্র স্থাপন করার সঙ্গে সঙ্গে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় উন্নতি করা হবে।  তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুৎখাতেকে এগিয়ে নেয়া হবে।
এদিকে নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে জানান এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ। তিনি আজ এনার্জি বাংলাকে টেলিফোনে বলেন, শুক্রবার ঘটনাস্থলে যাবো । স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করবো। গ্রামবাসী যা চায় তাই হবে। স্থান পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মানুষ মৃত্যুর ঘটনায় এস আলম গ্রুপের কোনো দায় নেই। এজন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কোনো সমস্যা হবে না।
বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নে এস আলম গ্রুপের কয়লা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিলে গত সোমবার গুলি হলে চারজন মারা যায়। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে এ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করার এক মাস পার না হতেই মানুষ হত্যার মত ঘটনা ঘটল। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পিডিবি’র সঙ্গে এই চুক্তি হয়।
কর্মশালা শেষে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, জনবহুল এ দেশে ব্যবস্থাপনা বেশ কঠিন।  শহর বড় হচ্ছে। গ্রামের মানুষ নগর ও শহরমুখী। জমির দাম বাড়ছে। এদিকে বিদ্যুতের সেবা বাড়াতে হলে জমির প্রয়োজন।  অথচ মানুষ জমি ছাড়বে না। এ বিষয়টি ব্যবস্থাপনার জন্য মহাপরিকল্পনা থাকতে হবে। সামনের দিনগুলোতে পরিবেশ এবং বিদ্যুতের সমন্বয় হবে বড় চ্যলেঞ্জ। তিনি বলেন, বিদ্যুতের সুবিধা বাড়াতে খরচ বাড়ছে তাই দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে আরও তিন বছর লাগবে। বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন ও বিতরণ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে এ সময়ে লোডশেডিং থাকবে।
এস আলম গ্রুপের দুই দশমিক চার বিলিয়ন ডলারের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৭৫ শতাংশ ঋণ দেবে চীন। যার পরিমাণ এক দশমিক ৭৩৯ বিলিয়ন ডলার। আমদানি করা কয়লায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চলবে। এজন্য গণ্ডামারার পশ্চিম বড়ঘোনায় ৬০০ একর জমি কেনা হয়েছে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দর ধরা হয়েছে ছয় টাকা ৬১ পয়সা। এখানে মার্চ মাস থেকেই অবকাঠামো নির্মান শুরু করার কথা।
এদিকে সকালে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বলা হয়, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে। সেই সময়ের অর্থনৈতিক সংগতি রেখে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সাজাতে হবে। এজন্য উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। এজন্য বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা পরিবর্তন করা হবে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই পরিকল্পনা করা হবে।