বাংলাদেশকে ঋণ সহায়তায় কোনো ঝুঁকি নেই আইএমএফের

বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন (৪৫০ কোটি) ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে ঢাকায় সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল।

বুধবার (৯ নভেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে আইএমএফ প্রতিনিধিদল।

গত ২৬ অক্টোবর থেকে আজ ৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করে ১০ সদস্যের দলটি। এই দলের প্রধান ছিলেন রাহুল আনন্দ। সফর শেষে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন আইএমএফ প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আজই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফ জানায়, বাংলাদেশেকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে আইএমএফ। ৪২ মাসে পুরো ঋণটা দেওয়া হবে। এরমধ্যে এক্সটেনডেন্ট ক্রেডিট ফ্যাসিলিটির (ইসিএফ) আওতায় ৩ দশমিক ২০ বিলিয়ন, এক্সটেনডেন্ট ফান্ড ফ্যাসিলিটির (ইএফএফ) আওতায় ১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে।

প্রতিনিধিদল জানায়, বাংলাদেশে ঋণ দেওয়া নিয়ে আইএমএফের কোনো ঝুঁকি নেই। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের উন্নয়ন অংশীদারত্ব দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটলেও এই সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবে না।

আইএমএফ প্রতিনিধিদল জানায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব মূল্যস্ফীতির চাপে আছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দাম বেশি। ফলে আমদানি করা পণ্য বেশি দামে আনতে হচ্ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ. হ. ম. মুস্তফা কামাল বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে আমরা যেভাবে চেয়েছি, সেভাবেই সাড়ে চার বিলিয়ন (সাড়ে চারশ কোটি) ডলার ঋণ পাচ্ছি। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই আমরা প্রথম কিস্তি পাবো। মোট সাত কিস্তিতে ২০২৬ সালের মধ্যে এই ঋণের পুরো টাকা পেয়ে যাবো।

অর্থমন্ত্রী আরও জানান, আমরা ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তিতে পাবো ৪৪৭ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার। ছয় মাস পর পর ৫৫৯ দশমিক ১৮ মিলিয়ন করে সাত কিস্তিতে পুরো ঋণটা পাবো। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড দিয়ে পরবর্তী ১০ বছরের মধ্যে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফের পক্ষ থেকে কোনও শর্ত দেওয়া হয়নি। আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যেসব বিষয় সংস্কারের কথা ভাবছি, তারাও একই কথা বলেছে।

চলতি বছরের ২৪ জুলাই ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে আইএমএফকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে গত ২৬ অক্টোবর আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসেছে। এই দলের প্রধান ছিলেন রাহুল আনন্দ। সেই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আজ বৈঠক ছিল অর্থমন্ত্রীর। এ বৈঠকেই বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আজই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানান তারা।