বাংলাদেশে প্রথম পূর্ণ মানচিত্র উপস্থাপন হচ্ছে

উপস্থাপন হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন মানচিত্র। সম্পূর্ণ বাংলাদেশের প্রথম মানচিত্র। সাথে উপস্থাপন হচ্ছে সমুদ্র সম্পদ আহরণের মহাপরিকল্পনা। সমুদ্রের নিরাপত্তা, এর সম্পদ আহরণ এবং মাটির নিচের খনিজ আহরণে করা হবে পরিকল্পনা। এজন্য বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করবেন।
সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পর নির্দিষ্ট হয়েছে বাংলাদেশের সীমানা। এরআগে প্রতিবেশি দুই দেশের সাথে বিরোধ থাকায় বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারণ করা যায়নি। তাই এতদিন ছিলনা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের মানচিত্র। প্রধানমন্ত্রীর সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই মানচিত্র উপস্থাপন করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সাথে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় ও সংস্থা সমুদ্র সম্পদ আহরনে তাদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে। সমুদ্রের মৎস সম্পদ, সমুদ্রের নিচে খনিজ সম্পদ কিভাবে সম্পদে পরিনত করা যায় তা নিয়ে নেয়া হবে সিদ্ধান্ত। একই সাথে এসবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেয়া হবে ব্যবস্থা।
সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নিজ নিজ বিষয়ের উপর সমুদ্র সম্পদ আহরণের জন্য পরিকল্পনা তৈরী করেছে। স্ব স্ব মন্ত্রণালয় তাদের পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করবে। পরে সামগ্রীকভাবে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের এই বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার জন্য ডাকা হয়েছে।
ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পর এক সাথে মহাপরিকল্পনা করতে প্রধানমন্ত্রীর এটিই প্রথম বৈঠক। প্রতিবেশি দুই দেশের সাথে সীমা বিরোধ থাকায় এত দিন মৎস আহরণ সম্ভব হয়নি। সাথে সম্ভব হয়নি পুরো এলাকা জুড়ে খনিজ অনুসন্ধান করা। যারফলে বিশাল সম্পদ আহরণ থেকে বঞ্চিত ছিল বাংলাদেশ। প্রতিবেশি দুই দেশও তাদের এলাকায় সম্পদ আহরণ থেকে বঞ্চিত ছিল। আন্তজাতিক আদালতে রায়ের পর তিন দেশই তাদের সীমানা নির্ধারণ করতে পেরেছে।
দুই দেশের সাথে বিরোধ নিষ্পত্তির পর প্রায় এক লাখ ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নিজেদের হয়েছে। গতমাসে ভারতের সাথে আর দুই বছর আগে মিয়ারমারের সাথে সমুদ্র জয়ে এই এলাকা নিজেদের একচ্ছত্র অধিনে এসেছে। ভারতের সাথে জয়ে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার এবং মিয়ারমারের সাথে জয়ে বাকি প্রায় এক লাখ বর্গকিলোমিটার। নির্ধারন হয়েছে বাংলাদেশের জলসীমা। এতে তৈরী করা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের সম্পূর্ণ মানচিত্র। সমুদ্রের ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশি রাষ্টের অংশে ইতিমধ্যে প্রচুর খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। ধরাণা করা হচ্ছে বাংলাদেশের অংশেও প্রচুর খনিজ সম্পদ আছে। মৎসসম্পদ তো পুরো অঞ্চল জুড়ে আছেই। এসব সম্পদ আহরণই হবে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ।
আজকের বৈঠকে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, আইন ও বিচার, পানিসম্পদ, শিল্প, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পেট্রোবাংলা, আণবিক শক্তি কমিশন, ভুতত্ত্ব ও জরিপ অধিদফতর, আবহাওয়া অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মন্ত্রীসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর বলেন, খনিজ সম্পদ আহরণ ও এর সম্ভাবনা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হবে। আমরা আমাদের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরব। আবার মংস মন্ত্রণালয় তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরবে। এভাবে স্ব স্ব অবস্থান থেকে পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে।