বান্দরবানের পাহাড়ের বিদ্যুৎবঞ্চিত গ্রামগুলো পাচ্ছে সৌর বিদ্যুৎ

স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৬ বছরের মাথায় বিদ্যুৎ পেতে যাচ্ছে বান্দরবানের দুর্গম থানচি উপজেলাবাসী। বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হওয়ার পর থানচির মানুষ কৃষি উন্নয়ন,আবাদ ও সেচ সুবিধা পাবার পাশাপাশি কৃষিপণ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণের সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছেন থানচি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মৌজা হেডম্যানরা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি জানান, বান্দরবান জেলার দুর্গম থানচি উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন প্রকল্পের বাস্তবায়নে ২৬ কোটি টাকা এবং পার্বত্য জেলাগুলোর বিদ্যুৎবঞ্চিত দুর্গম এলাকাসমূহকে বিনামূল্যে সৌর বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে ৪০ কোটি টাকার বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, চিম্বুক থেকে থানচি উপজেলা সদর এলাকা পর্যন্ত নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের কাজ ২৬ নভেম্বর দুপুর থেকেই শুরু হয়ে গেছে।
জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে থানচি বিদ্যুৎতায়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হবে আগামী জুন নাগাদ। ব্যয় বরাদ্দ রয়েছে ২৬ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসছে প্রায় ২০ হাজার লোক।
অন্যদিকে পার্বত্য তিন জেলার যেসব এলাকায় আগামী ৫ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছানো সম্ভব নয়, সেইসব এলাকায় সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে বলে জানান পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। বান্দরবান, রাংগামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার দুর্গম এলাকাসমূহে খুবশিগগিরই সৌর বিদ্যুত প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজও শুরু করা হবে বলে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর তথ্য দিয়েছেন।
রাঙ্গামাটি বিদ্যুৎতায়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মতিউর রহমান জানান, চিম্বুক পর্যটন কেন্দ্র থেকে থানচি উপজেলা সদর পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩৩ হাজার ভোল্ডের এবং ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ১১ হাজার ভোল্ডের সাব-সংযোগের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী জুন নাগাদ প্রকল্পের পুরোকাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ওয়াইজংশন এলাকার সাবষ্টেশন থেকেই থানচি উপজেলা সদরের বিদ্যুৎ সংযোগ যুক্ত হবে এবং বিদ্যুত সঞ্চালন ও সংরক্ষণ করা হবে। এ প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে বিদ্যুৎতায়ন কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং নেতৃবৃন্দের সার্বিক সহায়তা চেয়েছেন।
পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি পর্যটন কেন্দ্র চিম্বুক পাহাড়ে থানচি বিদ্যুৎতায়ন প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন শেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য দেন।
তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই দীর্ঘ সংলাপের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে একটি সফল চুক্তি করেছিলেন রক্তাক্ত পরিস্থিতি ও পরিবেশের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাথে। বর্তমান সরকারের সময়ের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন হবে বলেও তিনি জানান।