বিদ্যুতে ২০৩০ সালে বায়ু দূষণ বাড়বে ৩গুণ

বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাথে বাড়ছে বায়ু দূষণ। বাংলাদেশে ২০৩০ সালে বর্তমানের চেয়ে তিনগুণ বেশি বায়ু দূষণ করবে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ প্রযুক্তি সংযোগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধরণের জ্বালানি ব্যবহার করে এই দূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
বিদ্যুৎখাতের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ি ২০৩০ সালে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে। তখন বায়ুমণ্ডলের জন্য ক্ষতিকর কার্বন-ডাইঅক্সইড (গ্রিন হাইজ গ্যাস) গ্যাস নির্গমন বাড়বে।
ইউএসএআইডি তাদের এক গবেষণায় এতথ্য জানিয়েছে। ইউএসএআইডি’র গবেষণায় জানানো হয়েছে, ২০৩০ সালে বাংলাদেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১২৫ মিলিয়ন মেট্রিকটন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করবে। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে বছরে ৩৭ মিলিয়ন মেট্রিকটন কার্বনডাই অক্সাইড নির্গত হয়। প্রতিবেদনে পরিবেশন বান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে গ্রিন হাউজ গ্যাসের নির্গমন কমানো যেতে পারে। বলা হয়েছে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশাপাশি নবায়ন যোগ্য জ্বালানি বায়োমাসকে সহযোগী জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কম হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করলে ২০৩০ সালে কার্বন নির্গমন ১২৫ মিলিয়ন মেট্রিকটন থেকে ৮৮ মিলিয়ন মেট্রিক এ নেমে আসবে। তবে বিক২০৩০ সালে জ্বালানি ব্যবহারের ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেশি হবে।
বিদ্যুৎ খাতের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ি ২০৩০ সালে প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট/ঘণ্টা) বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হবে আট টাকা ৪০ পয়সা। আর নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করলে খরচ হবে নয় টাকা ৬০ পয়সা। বায়োমাস ছাড়াও তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), বিদ্যুৎ আমাদনির মাধ্যমেও উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে এলএনজি’র ব্যবহার বাড়ালে ২০৩০ সালে কার্বন ডাই অক্সাইড এর বার্ষিক নিঃসরণ কমে হবে ১০০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। আর বিদ্যুৎ আমাদনি (মোট উৎপাদনের ৩০ শতাংশ) মাধ্যমে নির্গমন ৩০ মিলিয়ন মেট্রিকটন পর্যন্ত কার্বনডাই অক্সাইডের নির্গমন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানির ব্যবহারে দক্ষতা বাড়ানো, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো এবং সিস্টেম লস কমালে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী জানান, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বপ্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ খুব কম প্রভাব ফেলছে। তবুও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আমরা সচেষ্ট। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে যাকে কম দূষণ হয় সে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এতে বায়ু দূষণ কম হবে।
এদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বুধবার বিদ্যুৎ ভবনে এক কর্মশালার আয়োজন করে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংস্থা স্রেডার চেয়ারম্যান তাপস কুমার রায়সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।
ইউএসএআইডি ক্যাটালাইজিং ক্লিন এনার্জি ইন বাংলাদেশ (সিসিইবি) শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি ব্যবহারে সরকারের সাথে কাজ করছে।