গ্যাসের দাম ২২ বছরের জন্য নির্ধারণের প্রস্তাব: ক্রয় কমিটিতে নাকচ
বিদ্যুৎ কেন্দ্রর জন্য উচ্চ দাম ধরে দীর্ঘ দিন একই দাম রাখার প্রস্তাব দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। কিন্তু সরকারি মন্ত্রিসভা ক্রয় কমিটি তা মানেনি।
বুধবার সচিবালয়ে ক্রয় কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাব সংশোধন করতে বলা হয়েছে।
মেঘনাঘাট ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রর জন্য এখনই ২২ বছরের গ্যাসের দাম নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন যে দাম নির্ধারণ হবে সেই একই দাম ২২ বছর ধরে দিতে হবে।
বাজার বিবেচনায় এভাবে দাম নির্ধারণ ঠিক নয় বিবেচনায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেয়নি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। তবে এই প্রস্তাব সংশোধন হলে প্রকল্প অনুমোদন দিতে আপত্তি নেই ক্রয় কমিটির।
বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ক্রয় কমিটি জানিয়েছে, এক সাথে ২২ বছরের দাম নির্ধারণ ঠিক হবে না। সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের দাম নির্ধারণ করা যেতে পারে। কারণ ভবিষ্যতে গ্যাসের দাম পরিবর্তন হতে পারে। বাজার দরে এই দাম পরিবর্তন করতে হবে।
বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মেঘনাঘাটে ৪৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে ‘শর্ত সাপেক্ষে’ নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, কনসোর্টিয়াম অব আনলিমা টেক্সটাইল ও জিই ক্যাপিটাল গ্লোবাল এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট জিভির ৪৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার গ্যাস-এলএনজি কম্বাইন্ড সাইকেল
বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন না দিয়ে কিছু শর্ত দিয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প নিয়ে কমিটির আপত্তি নেই। তবে দীর্ঘ মেয়াদে একই দামে গ্যাস সরবরাহের যে প্রস্তাব তা নিয়ে আপত্তি আছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যে টাকা চেয়েছে এটা এভাবে দেয়া যাবে না। ২২ বছরের জন্য একবারে। আমরা বলেছি ২২ বছরে গ্যাসের দাম কী হবে না হবে তা পাঁচ বছর পর পর পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। পর্যালোচনা করে আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম থাকবে সেই টাকার পরিমাণ নিয়ে প্রকল্প আনা হলে অনুমোদন দেয়া হবে।
যৌথ বিনিয়োগের ওই কোম্পানি যদি সরকারের এই শর্ত না মানে, তাহলে কী হবে সাংবাদিকরা তা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান।
তিনি বলেন, যেভাবে প্রস্তাব এসেছে সেভাবে অনুমোদন দেয়া হবে না। এটা এলএনজি বেইজড, গ্যাসের দাম ২২ বছরে সারা বিশ্বে কী হবে, এটা এখন বলা অসম্ভব। এটা ছোট আকারে ৫ বছর করে করে নিয়ে আসতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা এখন যে স্টেজে আছি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে বলে দিয়েছি, তারা স্টাডি করে দেখবে এই মুহূর্তে আমরা কী পরিমাণ উৎপাদন করি এবং চাহিদা কী আছে। আগামী ৫, ১০ বা ২০ বছরে কী চাহিদা আসবে। সেভাবে রিপোর্ট দিলে আমাদের সুবিধা হবে। যাতে অলস ফেলে রেখে অর্থ না দিতে হয়। অলস পড়ে থাকলে সরকার তো কোন টাকা পাবে না।
সভায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ভোলা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাস টারবাইন ইউনিট-১ এবং ২ এর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য খুচরা যন্ত্রাংশ এবং এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ সেবা সংগ্রহে ২০৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। জেনারেল ইলেকট্রিক এ কাজ করবে।
এছাড়া বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ দিতে প্রকল্পের আওতায় ৬৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার সরঞ্জাম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।