বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সেঞ্চুরি
এবার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সেঞ্চুরি হল। বাংলাদেশে এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রর সংখ্যা ১০০টি। গত ছয় বছরে ৭১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে মাইল ফলকে পৌছালো বাংলাদেশ। ১০০টি কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট।
বৃহষ্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশুগঞ্জের তিনটি কেন্দ্র উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রর সংখ্যা সেঞ্চুরিতে পৌছে দিয়েছেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষমতা ১১ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। তবে উৎপাদন ক্ষমতা আছে ১১ হাজার ২৮২ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্য অনুযায়ি বৃহষ্পতিবার দেশের কোথাও বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিল না। এদিন সর্বোচ্চ চাহিদার সময় (সন্ধ্যায়) বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে আট হাজার ৪০৪ মেগাওয়াট। এসময় বিদ্যুতের চাহিদা এবং সরবরাহ সমান ছিল। তাই আনুষ্ঠানিক কোথাও লোডশেডিং ছিল না।
ছয় বছর আগে ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল ২৭টি। যার উৎপাদন ক্ষমতা ছিল চার হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। ২০১৫ সালে এসে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০০টিতে। অর্থাৎ ছয় বছরে বেড়েছে ৭১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্যাপটিভসহ উৎপাদন বেড়েছে ১৪ হাজার ৭৭ মেগাওয়াট। এরমধ্যে ক্যাপটিভ থেকে পাওয়া যাচ্ছে দুই হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবিষয়ে এনার্জি বাংলাকে বলেন, বর্তমান সরকারের নিরলস চেষ্টার ফল এই সেঞ্চুরি। এই ধারাবাহিকতা চলমান থাকবে। চলতি বছর আরও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে ১৩টি নতুন কেন্দ্র চালু করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার লক্ষ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
পিডিবি’র হিসাব অনুযায়ি দেশের নয়টি অঞ্চলে কেন্দ্রগুলো অবস্থিত। এরমধ্যে ঢাকা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি কেন্দ্র আছে। ঢাকায় ২৪টি কেন্দ্র যার উৎপাদন ক্ষমতা তিন হাজার ৩২৮মেগাওয়াট। এরপর কুমিল্লা অঞ্চলে। এই অঞ্চলে ১৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ৫৭৯ মেগাওয়াট। চট্টগ্রাম অঞ্চলে ১২টি যার উৎপান ক্ষমতা এক হাজার ৩২৫ মেগাওয়াট, রাজশাহি অঞ্চলে ১২টি কেন্দ্রে ৮০৯ মেগাওয়াট, সিলেট অঞ্চলে ১০টি, যার উৎপাদন ক্ষমতা ৯৮৭ মেগাওয়াট, খুলনা অঞ্চলে আটটি কেন্দ্রে এক হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট এবং রংপুর অঞ্চলে চারটিতে ২৮০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, বর্তমানে দেশের ৭৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। অন্যদিকে ২০০৯ সালে সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী ছিল ৪৭ শতাংশ। বর্তমানে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় (কিলোওয়াট ঘণ্টায়) ৩৬১।
জ্বালানি সংকটের কারণে ৪১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। অন্যদিকে মেরামতের কারণে এক হাজার ৭৮৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না।
বৃহষ্পতিবার যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো উদ্বোধন করা হয়েছে তাহলো, আশুগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ইউনাইটেড আশুগঞ্জ ২০০ মেগাওয়াট মডিউলার কেন্দ্র ও আশুগঞ্জ মিডল্যান্ড ৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র।