বিদ্যুৎ খাতে কাজের গতি নেই

বিদ্যুৎ খাতের কাজের গতি নেই। বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, সঞ্চালন লাইন, বিতরণ লাইন কিম্বা উপকেন্দ্র  স্থাপন। কোন কাজই যতটা হওয়ার কথা ততটা হয়নি। এসব কাজে কোনটাতে অর্থ ছাড় হলেও তা খরচ করা যায়নি। কোনোটার কাজ হয়েছে লক্ষমাত্রার অর্ধেক। কোনটা মাত্র শুরু হয়েছে। কোনটার টাকা এখনও পাওয়া যায়নি। এঅবস্থায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি সংশ্লিষ্ঠ প্রকল্প পরিচালকদের যথাসময়ে প্রকল্প শেষ করার তাগিত দেন।
রোববার বিদ্যুৎ বিভাগে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। এসময় বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলামসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত যে কাজ হওয়ার কথা ছিল তার ৪০ ভাগই হয়নি। জানুয়ারি মাসের মধ্যে মোট কাজের ৫৩ ভাগ হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু হয়েছে মাত্র ৩৩ ভাগ। গত অর্থবছর এই সময়ে ৩২ দশমিক ৩৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৬৭টি প্রকল্প আছে। এজন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে নয় লাখ ১৭ হাজার ১৫৮ লাখ টাকা। অর্থবছরের অর্ধেক শেষ হলেও এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে দুই লাখ ৯৯ হাজার ১৭৯ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী ঢাকায় দ্রুত মাটির নিজে সাবস্টেশন বসানোর প্রকল্প কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেন। তিনি সকলকে কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প বাসস্তবায়নে অতিরিক্ত সময় লাগলে খরচও বাড়ে। এতে রাস্ট্রীয় অর্থের অপচয় হয়। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এ জন্য প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে এনে আরও দক্ষ, আন্তরিক এবং নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বিদ্যুৎকেন্দ্র, সাবস্টেশন রক্ষনাবেক্ষণ এবং এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকলকে সতর্ক হবার পরামর্শ দেন।
টাকা ছাড় হলেও বিবিয়ানা ৪০০ মেগাওয়াটের তিন নম্বর প্রকল্পটিতে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সাত কোটি টাকা ছাড় হয়েছে। কিন্তু তার এক টাকাও এখনও খরচ করতে পারেনি। শাহজিবাজার ৩৫ মেগাওয়াটের দুটি কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন হলেও কোন টাকা ছাড় হয়নি। ফলে কাজও হয়নি। একই অবস্থা বাঘাবাড়ি ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট, এবং চাপাঁইনবাবগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। শাহজিবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য মাত্র জমি উন্নয়নের কাজ হয়েছে। অথচ ইতিমধ্যে পাঁচ কোটি টাকা ছাড় হয়েছে। যে টাকা ছাড় হয়েছে তার এক টাকাও খরচ করতে পারেনি।
বৃহত্তর চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্পের কাজ হয়েছে মাত্র দুই দশমিক ৬৮ ভাগ। খুলনা ও কুমিল্লায় প্রিপেউড মিটার লাগানোর কথা থাকলেও তার কোন কাজই হয়নি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর ও রাজশাহিতে পল্লী বিদ্যুতের কার্যক্রম বাড়ানোর প্রকল্পের একটুও কাজ হয়নি।  কথা ছিল বঙ্গভবন, গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১১ কেভি সুইচিং স্টেশন নির্মানের। কিন্তু তা হয়নি।
আবার বড়পুকুরিয়া ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রর জন্য এক টাকাও ছাড় না হলেও বলা হচ্ছে ২০ ভাগ শেষ।