বিদ্যুৎ জ্বালানির দায়মুক্তি দেয়া ছিল অবৈধ: হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক (বৃহস্পতিবার, ১৪ই নভেম্বর ২০২৪):
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তির বিধান অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট এই রায় দেয়।
দায়মুক্তির আইনকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে এই রায় দেওয়া হয়।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে বলা হয়, দায়মুক্তি দিয়ে করা আইন অবৈধ এবং ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ব্যক্তির একক ক্ষমতা গণতান্ত্রিক দেশে থাকতে পারে না। এটি সংবিধান পরিপন্থী।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ৭ই নভেম্বর রুলের শুনানি শেষ হয়।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সিনথিয়া ফরিদ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০’- এর ৯ ও ৬ (২) ধারা অনুযায়ী, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ এই আইনের মাধ্যমে কোনো ক্রয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেত না।
এই ধারা দুটি চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুল জারি করেন। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে হাইকোর্ট রায় দিল।
রিটে বলা হয়, এই আইনের অধীনে কেনা রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে অস্বাভাবিক খরচ আর অনিয়মের কারণেই বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। অথচ সেই অনিয়মকে বৈধতা দেয়ার জন্য আইন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব অনিয়মের কোনো বিচারও চাওয়া যাবে না—এটা জনস্বার্থবিরোধী ও সংবিধানের পরিপন্থী।
আইনের ৬ এর ধারায় বলা আছে, জ্বালানিমন্ত্রী তার একক বিবেচনায় কোনো একক ব্যক্তি বা কোম্পানির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুক্তি সই করতে পারবেন। এখানে মন্ত্রীর একক বিবেচনায় যাকে ইচ্ছা, যত টাকায় ইচ্ছা চুক্তি করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
আর আইনটির ৯ নম্বর ধারায় বলা আছে, কাকে চুক্তি দেয়া হয়েছে, কত টাকার চুক্তি করা হচ্ছে, এসব ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে আদালতের শরণাপন্ন হওয়া যাবে না।