বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে আবার ‘ধীরে চলো’ নীতি
বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে আবার ধীরে চলো নীতি শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত উৎপাদনের কথা বলা হলেও তা হচ্ছে না। তাই এই নীতিতে আবার ফেরত যেতে হচ্ছে।
চাইলেই আর বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে না। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে এবষিয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ক্রমর্বমান চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। তাই নতুন করে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ ধীরে দিতে বলা হয়েছে।
বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কাজ এখনও শুরুই করা যাযনি। বাড়া আনা সেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোই এখনও মূল ভরসার জায়গা আছে। এঅবস্থায় চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ফলে উৎপাদন আর চাুহিদার তফাতও দিন দিন বাড়ছে। আর এই পার্থক্য কিছুটা হলেও সমন্বয় করার জন্যই নতুন গ্রাহক করা হচ্ছে না।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবিষয়ে বলেন, কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যথাসময়ে উৎপাদনে আনার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আশাকরি এগুলো হয়ে যাবে। ২০২১ সালের মধ্যে সকলের ঘরে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব হবে।
২০১৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে না পেরে ধীরে চলো নীতি শুরু করেছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে কোন নির্দেশ না দিলেও মৌখিকভাবে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে শিল্প এমন কী আবাসিক গ্রাহকদেরও সংযোগ দিতে মানা করা হয়েছিল। পরে চিঠি দিয়ে বিতরণ কোম্পটানিগুলকে একটি নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ না দিতে বলা হয়। পরে সে নির্দেশনা তুলে নেয়া হয়। শিল্পসহ সকল গ্রাহককে আবেদন করলেই বিদ্যুৎ দেয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু নতুন দুই বছর আগের সেই নির্দেশনা আবার দেয়া হয়েছে। আপাতত মৌখিকভাবে এই নির্দেনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে গ্রামে কম বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় বলে সেখানে এবিষয়ে তেমন কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে বিদ্যুৎ দিতে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার বেশিরভাগই এখনও শুরুই হয়নি। বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর চুক্তি হয়েছে। কিন্তু কাজ একটিরও এখনও শুরু হয়নি।
বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে এই মুহুর্তে প্রায় ১৩ লাখ আবেদন জমা আছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গ্রাহকদের সংযোগ দিলেও এই সংখ্যা খুব বেশি কমছে না। তারমানে বিদ্যুৎ নেয়ার আবেদনও দিন দিন বাড়ছে। নতুন যারা বিদ্যু চাইছেন তাদেরকে ধীরে ধীরে সংযোগ দিতে বলা হয়েছে বলে যানা গেছে।
যারা আবেদন করেছেন তাদেরকে বিদ্যুৎ দিলে চাহিদা আরও প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট বেড়ে যাবে। আর এই চাহিদা বেড়ে গেলে যারা বিদ্যুৎ পাচ্ছে তাদের বিভ্রাট আরও বেড়ে যাবে। সে জন্যই ধীরে চলো নীতিতে যাওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন, এমনিতেই এখন চাহিদার একটি বড় অংশ ঘাটিত থাকছে। সাথে নতুন আবেদনকারীদের দ্রুত সংযোগ দিলে চাহিদা বাড়বে। সাথে ঘাটতি আরও বাড়বে। চাহিদার সাথে উৎপাদন বাড়বে না। এজন্যই ধীরে চলো নীতিতে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হচ্ছে।
বর্তমানে গড়ে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় উৎপাদন হচ্ছে প্রায় সাত থেকে সাড়ে হাজার মেগাওয়াট। লোকসান বাদ দিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে যাচ্ছে গড়ে ছয় হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। আর একই সময় চাহিদা আছে প্রায় আট হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ দেড় হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছেই।