বিপিসি জন্য ভর্তুকি থাকছে না
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ভর্তুকির জন্য প্রতিবছর একটি বিশাল পরিমাণের টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও আগামী বাজেটে কোনও অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বিপিসি’র লোকসান কমতে শুরু করেছেন। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। এসব কারণে নতুন বছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ কোনও অর্থ বরাদ্দ রাখছে না সরকার। এক বিপিসি ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত ২০১৪-১৫ অর্থবছর জ্বালানি তেল কেনাবাবদ ৫ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা এবং চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে ১০ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে বিপিসি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। তাই বিপিসির জ্বালানি তেল কেনা বাবদ নতুন বছর সরকারকে কোনও অর্থ বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে না।
বিপিসি সূত্রে পাওয়া গত চার বছরের হিসাবে দেখা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে জ্বালানি তেল কেনা বাবদ বিপিসি লোকসান দিয়েছে ৯ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে এই লোকসানের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে লোকসান কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থবছর বিপিসি লোকসান দিয়েছে ২ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা।
গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম দিকে বিপিসি কিছুটা লোকসানে থাকলেও সেই লোকসান কাটিয়ে বিপিসি মোট লাভ করেছে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার কোটি টাকার বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি টাকা বিপিসির কোষাগারে জমা আছে। প্রতি লিটার ডিজেল কেরোসিন আর ফার্নেস অয়েলে গড়ে ১৬ থেকে ১৮ টাকা লাভ হচ্ছে। অকটেন ও পেট্রোল খাতে মুনাফা হচ্ছে ২০ টাকার কিছুটা বেশি। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বিপিসি ও সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সূত্রে দেখা গেছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে মোট জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছে ৪৮ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন। ২০১১-১২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৫১ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছর আমদানি করা হয়েছে ৫৪ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল। ২০১৪-১৫ অর্থবছর আমদানি করা হয়েছে ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল। আর চলতি ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের জন্য মোট ৫৭ লাখ ২৯ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানির প্রয়োজন হতে পারে।