বিবিয়ানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রর নামে বালু তোলা থেমে নেই

বিবিয়ানায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে জমি ভরাট কাজ শেষ হয়েছে ২০১২ সালে। তবু এই তিন বছর পরও কুশিয়ারা নদী থেকে বালু তোলা থেমে নেই। একটি মহল অবৈধভাবে সামিট গ্রুপের নাম ভাঙ্গিয়ে নদী থেকে বালু তুলেই চলেছে। এ পর্যন্ত চুক্তি থেকে প্রায় চারগুণ বালু তোলা হয়েছে। এতে নদী ভাঙ্গনের আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভও তৈরী হয়েছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাছে নবীগঞ্জে বিবিয়ানা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। ২০১২ সালে নদী থেকে বালু নিয়ে এই জায়গা ভরাট কাজ শেষ করা হয়। সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনও শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও সেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রর নাম করেই বালু তোলা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সামিট পাওয়ারের চাহিদার তুলনায় চার গুণ বালু তোলা হচ্ছে। এতে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের চুক্তির শর্তও ভঙ্গ করা হয়েছে। নতুন করে সামিট পাওয়ারের অনুমোদিত সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিটকো এই চুক্তি নবায়ণ করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে অনুমতি নিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। অথচ বালু তোলার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসক । ফলে অবৈধভাবেই এই বালু তোলা হচ্ছে।
সামিট পাওয়ারের বিবিয়ানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রর এরিয়া ব্যবস্থাপক জহির উদ্দিন মোল্লা মোবাইলে জানান, বিবিয়ানা কেন্দ্রর মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। সিটকো’র সাথে এই মুহুর্তে আর চুক্তি নবায়ন করা হচ্ছে না। কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের পুরানো চুক্তি কিভাবে নবায়ণ করা হচ্ছে তা জানা নেই।
ভূমি মন্ত্রণালয়, জ্বালানি বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের অনাপত্তির প্রেক্ষিতে অবানিজ্যিক ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে ৬৯ লাখ ১০ হাজার ঘনফুট বালু/ মাটি উত্তোলনের অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এক কোটি ৩৮ লাখ ঘনফুট বালু তোলা হয়েগেছে। এছাড়া ব্যক্তিগত আরও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে অন্তত দেড় কোটি ঘনফুট বালু বিক্রি করেছে। জেলা প্রশাসন ও নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ প্রতি ঘনফুটে ২৫ পয়সা হিসেবে ৬৯ লাখ ১০ হাজার ঘনফুটের জন্য প্রায় ৩৪ লাখ টাকা পেয়েছে। অতিরিক্ত উত্তোলিত প্রায় দুই কোটি ২০ লাখ ঘনফুট বালুর রাজস্ব আত্মসাৎ করেছে সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিটকো বলে অভিযোগ উঠেছে ।
সুত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ারের বিবিয়ানা কেন্দ্রর মাটি ভরাটসহ সব কাজ শেষ হয়ে গেলেও তাদের সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিটকো পূর্বে অনুমোদন করা কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অবানিজ্যিক চুক্তি নবায়ণের প্রত্রিক্রয়া শুরু করেছে। কোন আপত্তি ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর সিটকোর পক্ষে নবায়ণের মতামত দিয়েছে। কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদী তীরবর্তী এলাকা ভাঙ্গন কবলে পড়বে বলে নবীগঞ্জের দূর্গাপুর গ্রামের তৈয়ব আলীর দায়ের করা হবিগঞ্জ জজ আদালতে একটি মামলা চলছে।