বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের গ্যাস উত্তোলন শুরু, গ্যাস সমস্যা কমলো
বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের রক্ষনাবেক্ষনের কাজ শেষ হয়েছে। ফলে রাজধানিসহ আশেপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। গ্যাস সরবরাহ শুরু হলেও কিছু কিছু এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকায় সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাস নিতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সিএনজি স্টেশন ২৪ ঘন্টার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। এতে ঈদের ছুটির পর প্রথম দিনই গ্যাসের অভাবে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। গণপরিবহণ সংকট থাকায় দ্বিগুণ ভাড়া নিয়েছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকরাও। বিদ্যুতে ৫০ থেকে ৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম দেয়া হচ্ছিল। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গিয়েছিল।
এ অবস্থায় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি ও বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান শেভরন জানিয়েছিল যে, এটি সাময়িক সমস্যা। একদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বুধবার দিবাগত রাত ১২টায় সরেজমিনে কয়েকটি সিএনজি স্টেশন ঘুরে দেখা যায় লম্বা লাইন। রাত ১২টায় গ্যাস সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা থাকায় আগে থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকেই। অটোরিকশার পাশাপাশি ছিল ব্যক্তিগত গাড়িও। অনেকেই জানায়, তিতাস গ্যাস বন্ধ রাখার বিষয়ে আগে থেকে বিজ্ঞাপন দেয়ার কথা বললেও বাস্তবে বেশিরভাগ মানুষই বিজ্ঞাপনটি খেয়াল করেনি। ফলে ঈদের পর পরই গ্যাসের ঘাটতি হওয়ায় বিপদে পড়ে যায় অনেকেই। বিশেষ করে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকরা। রাত ১২টার পর গ্যাস পাওয়ার পর স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেন সবাই।
দেশের মোট উৎপাদিত গ্যাসের অর্ধেকই হয় বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে। এখন দৈনিক গড়ে ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা হয়। এরমধ্যে বিবিয়ানা থেকে ১২০ কোটি ঘনফুট। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ থাকায় ১২০ কোটি ঘনফুট গ্যাস ঘাটতি হয়। ফলে গত মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত মাত্র ১৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দিয়ে চলছে দেশ।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মশিউর রহমান বলেন, বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের ৮০ শতাংশ গ্যাসই ব্যবহার করে তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে। ফলে এই ক্ষেত্রে গ্যাস বন্ধ হলে বৃহত্তর ঢাকা, বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলায় সংকট দেখা দেবেই। তাই সিএনজিতে রেশনিং করে গ্যাস সরবরাহ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। এখন বিবিয়ানায় গ্যাস উত্তোলন শুরু হওয়ায় সব স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
এদিকে শেভরন বাংলাদেশ জানায়, বুধবার রাত ১২টার আগেই তাদের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ হয়ে যায়। ফলে রাত ১২টার থেকে নিয়মিতভাবে বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলণ শুরু করা হয়।