বিলম্ব মাশুল ছাড়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সময় বাড়ছে
জুলাই মাসেও আবাসিক গ্রাহকদের বিলম্ব মাশুল মওকুফ করা হতে পারে।
রোববার বিদ্যুৎ বিভাগ আয়োজিত এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ সচিব ড. সুলতান আহমেদ বলেন, করোনার সময় সংক্রমণ রোধে আবাসিকে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের বিদ্যুৎ বিল জুনের ৩০ তারিখ পর্যন্ত জরিমানা ছাড়া দেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত বিল নিয়ে জটিলতা হওয়ায় আরও কিছুদিন আবাসিক গ্রাহকদের বিলম্ব মাশুল মওকুফের চিন্তা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন ছাড়াও বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
টাস্কফোর্সের সুপারিশের আলোকে বিভিন্ন বিতরণ কোম্পানির ২৯০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নানা ধরনের বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ সচিব।
বিদ্যুৎ সচিব বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে রিডাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং করতে পারেননি। এজন্য অতিরিক্ত বিলের সমস্যা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের সংকট সমাধানে মিটার রিডিং না নিয়ে বিল করা হবে না। ইতোমধ্যে জুন মাসে শতভাগ মিটার রিডিং নিয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
তিনি বলেন, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) অতিরিক্ত বিলের অভিযোগে ৩৬টি ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলীকে কারণ দর্শাও নেটিশ দিয়েছে। এ ছাড়া চারজনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর বাইরে ১৩ জন মিটার রিডার এবং একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) দুইজন মিটার রিডারকে বরখাস্ত করেছে। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) দুইজন মিটার রিডারকে বরখাস্ত করেছে, একজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে বদলি করেছে। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ২২৩ জনকে কারণ দর্শাও নোটিশ দিয়েছে। আরইবি মনিটরিং কমিটি গঠন করেছে। তাদের তদন্ত চলছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সচিব বলেন, এসব ঘটনায় কারও বড় ধরনের কোনো দায়িত্ব অবহেলা রয়েছে কি না, সেটা দেখা হচ্ছে। তবে কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তির মুখে না পড়ে এবং কোনো দোষী ব্যক্তি যেন ছাড় না পেয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ বিভাগ দাবি করেন, দেশে ৬২ হাজার ৯৬ গ্রাহক অতিরিক্ত বিল পেয়েছে। এর মধ্যে আরইবির দুই কোটি ৯০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৩৪ হাজার ৬৮১ জন ( দশমিক ১২ শতাংশ), ডিপিডিসির ৯ লাখ ২৬ হাজার ৬৮৯ জন গ্রাহকের মধ্যে ১৫ হাজার ২৬৬ জন (১ দশমিক ৬৫ শতাংশ), ডেসকোর ১০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৫ হাজার ৬৫৭ জন (যা ৭ লাখ ১০ হাজার ৬৬৩ জন পোস্টপেইড গ্রাহকের দশমিক ৭৯ শতাংশ), নেসকোর ১৫ লাখ ৪৮ হাজার গ্রাহকের মধ্যে দুই হাজার ৫২৪ জন (০ দশমিক ১৬ শতাংশ), ওজোপাডিকোর ১২ লাখ ১৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৫৫৬ জন (০ দশমিক ০৪৫ শতাংশ) এবং পিডিবির ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৫১৫ জনের মধ্যে দুই হাজার ৫৮২ জন (০ দশমিক ০৮ শতাংশ)
সচিব বলেন, বিল নিয়ে প্রাপ্ত অভিযোগ দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে এবং হবে। কোনো অবস্থাতেই ব্যবহৃত বিদ্যুতের বেশি বিল গ্রাহকদের পরিশোধ করতে হবে না।
তিনি জানান, করোনায় বিভিন্ন সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির ৬০১ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ জন মারা গেছেন।