বিশেষজ্ঞদের মতামত বিবেচনা করে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করুন

রামপালে একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে যাচ্ছে, যাতে রয়েছে সেকেলে এবং অনুপযুক্ত প্রযুক্তি। এই প্রকল্পে ভূমিকম্প ও প্লাবন বিষয়ে ঝুঁকি পুরোপুরি বিবেচনায় নেয়া হয়নি, যার ফলে প্রকল্পের চারপাশের এসব দুর্যোগ থেকে জলাশয়ে ভারি ধাতুগুলোর দূষণ ঘটতে পারে। সর্বোপরী এটি একটি অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা, যা বাংলাদেশকে একটি ফাঁকা পকেট পরিণত করবে এবং তা থেকে দেশটি মুক্তি পাবে না। তাই আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতামত বিবেচনা করে জনগনের দাবী মেনে নিয়ে অবিলম্বে এ প্রকল্প বাতিল করুন।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরিইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বিষয়ে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞবৃন্দের মূল্যায়ন প্রতিবেদন’ প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এ আহ্বান জানান সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির (সুরজাক) আহ্বায়ক সুলতানা কামাল।
সুলতানা কামাল বলেন, সরকার কী ধরনের চুক্তি করছে, কার স্বার্থে এসব চুক্তি হচ্ছে তা কিছুই জানতে পারছে না দেশের জনগণ। রাষ্ট্রীয় চুক্তিগুলো জনস্বার্থ রক্ষা করছে না, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর তা আবারো প্রমাণ হল। শুধু রামপাল নয়, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়েও প্রশ্ন তোলা দরকার।
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, দেশ বিদেশের বিভিন্ন সমীক্ষায় বলা হয়েছে প্রকল্পটি ঝুকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল। এটি অর্থনৈতিক, পরিবেশ ও সামাজিকদিক বিবেচনায় নিলে এটি কখনই দেশের জন্য কোন সূফল বয়ে আনবে না। তাই প্রকল্পটি বাতিল করার জন্য আমরা আবারও সরকারের নিকট দাবী জানাচ্ছি।
বাপা’র মহাসচিব ড. আব্দুল মতিন বলেন, এই আন্দোলন রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন নয়। আন্দোলন কর্মসূচিতে যাবো না। শুধু বলবো যতদিন এই প্রকল্প চলবে ততদিন ক্ষতি হতেই থাকবে।
সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, আমরা মনে করি রামপাল বিষয়ে সরকার পিছু হটতে শুরু করেছে। সরকার এরই মধ্যে রামপালের দ্বিতীয় প্রকল্প বাতিল করছে। আশা করি, প্রথম প্রকল্পও বাতিল করে শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, চার বছর ধরে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি এই প্রকল্পের জন্য একটি সমন্বিত ও সঠিক পরিবেশগত প্রভাব নিরুপণ (ইআইএ) দাবি করে আসছে যার মাধ্যমে সুন্দরবন, তার পার্শ্ববর্তী জনপদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক সামাজিক- অর্থনৈতিক কল্যাণের জন্য হুমকিমূলক অসংখ্য আনুষঙ্গিক ও চিহ্নিত ঝুঁকিসমূহ পরিষ্কারভাবে মূল্যায়ন নিশ্চিত থাকবে। আজ পর্যন্ত উক্ত কোম্পানির কোনো প্রকার সঠিক মূল্যায়ন তৈরি করতে পারেনি।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, যথাযথ ইআইএ’র অভাবে সুরজাক নিরপেক্ষ ও নির্মোহ অর্থনৈতিক-বায়ু দূষণ প্রশমন প্রযুক্তি-পানি দূষণ- সমুদ্রের পানি বৃদ্ধি-ভুমি ধ্বস, ভুমিকম্প কয়লা জমা করার পুকুর ও কয়লার ছাই বিষয়ে প্রকৃত বিশেষজ্ঞদের খোঁজ করেছে ও তাদের পরিবেশ প্রভাব কাজে যুক্ত করেছে।