বিশেষ আইনে গ্যাস ব্লক ইজারায় বিশেষ কমিটি

বিনাপ্রতিযোগিতায় সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশী কোম্পানিকে কাজ দিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। জ্বালানি বিভাগ এই কমিটি গঠন করেছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ) আইন-২০১০ এ সাগরের তিনটি ব্লকে কাজ দেয়ার অনুমোতি দেন। অনুমোতি পাওয়ার পর পরই এই কমিটি গঠন করা হল।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বালানি বিভাগের সচিব নাজিমউদ্দিম চৌধুরীকে এই কমিটি আহবায়ক করা হয়েছে। এছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, অর্থ মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান, পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) লেজিলেটিভ ও সংসদ বিভাগের একজন প্রতিনিধি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন প্রতিনিধি।
বিশেষ আইনে দ্রুত সময়ের মধ্যে সাগরের ১২, ১৬ ও ২১ নম্বর ব্লক বিদেশী কোম্পানিকে ইজারা দিতে এই কমিটি কাজ করবে।
জ্বালানি বিভাগের উর্দ্ধতন এক কর্মকর্তা বলেন, কোন পদ্ধতিতে কাজ দেয়া হবে তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা শেষে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) হবে, না কি বিদেশী কোম্পানির সাথে সরাসরি পেট্রোবাংলা চুক্তি করবে তা এখনও নিশ্চিত হয়নি।
সম্প্রতি জ্বালানি সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরী এনার্জি বাংলাকে জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করা হবে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যই বিশেষ আইন ব্যবহার করা হচ্ছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় গেলে অনেক সময় লাগবে।
সূত্র জানায়, বিশেষ আইনে করা হলেও বর্তমান পিএসসির আলোকেই ইজারা দেয়া হবে। তবে বর্তমান পিএসসি থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের দামের সাথে সমন্বয় করে নতুন দাম নির্ধারণ করা হতে পারে। অথবা যে কোন আর্ন্তজাতিক বাজারের দামের সাথে সংযোগ করে দেয়া হতে পারে। গঠন করা নতুন কমিটিই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রতিবেশী মিয়ানমারে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম (ওয়েল হেড/কুপের মুখে গ্যাসের দাম) সাত ডলার দুই সেন্ট। তবে এই দামের সঙ্গে গ্যাস সঞ্চালন খরচ আলাদা। সাধারণত প্রতি ইউনিট গ্যাসের বিপরীতে সঞ্চালন খরচ হয় গড়ে দেড় থেকে দুই ডলার। সব মিলে মিয়ানমারের গ্যাসের দাম গড়ে নয় ডলার পড়ে।
বর্তমানে বাংলাদেশের কূপমুখে গ্যাসের দাম সাড়ে ৬ ডলার। এখন দাম যদি সাত বা আট ডলার করা হয় তাহলে সঞ্চালন খরচ যোগ হয়ে দাম আরও বাড়বে।
২০১৪ সালে সাগরের ১২, ১৬ এবং ২১ নম্বর ব­কের জন্য যৌথভাবে দরপত্র জমা দেয় কনোকো ফিলিপস ও স্টেটঅয়েল কোম্পানি। পিএসসি সংশোধন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরও কনোকো পিএসসি (উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি) না করে বাংলাদেশ থেকে চলে যায়। পরে স্টেটঅয়েল একা কাজ করার আগ্রহ দেখায়। কিন্তু যৌথ দরপ্রস্তাব মূল্যায়নের পর একটি কোম্পানির সঙ্গে পিএসসি করা হবে কিনা অথবা কিভাবে করা হবে তা ঠিক করতে না পারার কারণে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। কনোকোর ফেলে যাওয়া ওই তিন ব­কের জন্যই বিশেষ আইন অনুমোদন করেছে সরকার।