বিশ্ববাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

বিশ্ববাজারে আবারও বাড়ল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম।
যুক্তরাষ্ট্রে মজুদ বৃদ্ধি এবং ওপেক প্লাস উত্তোলন কমিয়ে আনার কারণেই মূলত অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। ফিউচারস এক্সচেঞ্জে অক্টোবরে সরবরাহ চুক্তিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৯৪ সেন্ট বা ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৮৬ ডলার ৮০ সেন্টে। নভেম্বরের সরবরাহ চুক্তিতে বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮৬ ডলার ১৬ সেন্টে। বাজারে এ নিয়ে জ্বালানিটির দাম টানা ষষ্ঠ দিনের মতো বাড়ল।

খবর রয়টার্স।

অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম ১ ডলার ২৪ সেন্ট বা ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৮২ ডলার ৮৭ সেন্টে। বাজার আদর্শটির দাম এ নিয়ে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো বাড়ল।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্যে দেখা গেছে, দেশটিতে গত সপ্তাহে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ ধারণার চেয়েও অনেক বড় পরিসরে কমেছে। বিপুল রফতানি এবং পরিশোধন মজুদ কমার ক্ষেত্রে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে। ওই সময় প্রতিদিন ১ কোটি ৬ লাখ ব্যারেল করে মজুদ কমে যায়।

জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক ও এর মিত্র জোট ওপেক প্লাস লম্বা সময় ধরেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন কমাচ্ছে। এর বাইরে জোটের শীর্ষস্থানীয় সদস্য সৌদি আরব প্রতি মাসে দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল করে উত্তোলন কমাচ্ছে। আগামী অক্টোবরেও উত্তোলন কমানোর এ নীতি বহাল রাখবে দেশটি। সৌদি আরবের এ সিদ্ধান্তও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

সাক্সো ব্যাংকের বিশ্লেষক ওলে হানসন জানান, সৌদি খুব শিগগির জ্বালানি তেলের উত্তোলন বাড়াবে না। অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাণিজ্যিক মজুদের পরিমাণও কমছে পাল্লা দিয়ে। এর ফলে দাম ব্যারেল প্রতি ৮০-৯০ ডলারের মধ্যেই ওঠানামা করবে।

এদিকে আগস্টেও চীনে কারখানা কার্যক্রম কমেছে, যা দেশটির অর্থনীতিতে ধীরগতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস অনুসারে, চীনে ক্রয় ব্যবস্থাপক সূচক (পিএমআই) জুলাইয়ে ৪৯ দশমিক ৩ থেকে বেড়ে ৪৯ দশমিক ৭ হলেও পিএমআই ৫০ পয়েন্টের নিচেই রয়ে গেছে। পিএমআই পয়েন্টে ৫০ স্তর দিয়ে ক্রয় সূচকের কম-বেশি পরিমাপ করা হয়। ৫০ ভিত্তি সূচকের কম হলে ক্রয় হ্রাস ও বেশি হলে ক্রয় বৃদ্ধি নির্দেশ করে।

কভিড-১৯ সংক্রান্ত সব ধরনের বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেয়ার পর প্রত্যাশা করা হয়েছিল, চীনের অর্থনীতি খুব দ্রুতগতিতে ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু সে প্রত্যাশা বাস্তবে রূপ নেয়নি। এর ফলে দেশটিতে জ্বালানি তেলের চাহিদাও নিম্নমুখী। আন্তর্জাতিক বাজারে এটির দাম বাড়লেও চীনে নিম্নমুখী চাহিদার কারণে মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা সীমিত রয়েছে।