বড়পুকুরিয়া উম্মুক্ত করা হলে পানি নিয়ন্ত্রন সম্ভব

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি উম্মুক্ত পদ্ধতিতে খনন করলে এর পানি নিয়ন্ত্রন সম্ভব। তবে এখানে উম্মুক্ত করার পরে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশে যে প্রভাব পড়বে তা পর্যালোচনা করা হয়নি। এসব পর্যালোচনার পরেই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) বিভাগ বড়পুকুরিয়ার পানি ও মাটির ধরণ জরিপ করেছে। জরিপের প্রতিবেদনে এই তথ্য বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বড়পুকুরিয়া উত্তর দিকে উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুললে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমান পানি বের হবে তা দুই ভাবে নিয়ন্ত্রন সম্ভব। সরাসরি পাম্প করে অথবা পানির আধার তৈরী করে। তবে যে পরিমান পানি আসবে তাতে পরিবেশের প্রতি কী প্রভাব পড়বে, ফসলের কোন ক্ষতি হবে কিনা, যে পরিমান কয়লা তোলা হবে তার মূল্যের সাথে এই সব বিষয়ের অর্থনৈতিক মূল্য কত হবে ইত্যাদি সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। একই সাথে বলা হয়েছে, যদি বড়পুকুরিয়ার এই অংশে যদি সম্ভব হয় তবে ফুলবাড়িতেও উম্মুক্ত করা সম্ভব হবে।
পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান পর্যালোচনা কমিটির আহবায়ক মোশাররফ হোসেন বলেন, যে যে বিষয়ের বিশেষজ্ঞ তাকে দিয়ে সেটা পর্যালোচনা করতে হবে। আলাদা আলাদ পর্যালোচনা প্রয়োজন। অর্থনৈতিক বিষয় অর্থনীতিবিদ দিয়ে। পরিবেশের বিষয় পরিবেশ বিশেষজ্ঞ দিয়ে। আর সামাজিক বিষয় সমাজ বিজ্ঞানি দিয়ে। বড়পুকুরিয়ার উত্তরাংশে উম্মুক্ত খনন করতে কত মানুষকে সরিয়ে নিতে হবে তাও বিবেচনায় আনতে হবে।
৫৬০ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে এই জরিপ করা হয়েছে। ম্যাকসি পদ্ধতিতে এই জরিপ করা হয়েছে।
পেট্রোবাংলার পরিকল্পনা অনুযায়ি, আগামী দশ বছর পর বছরে প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন হবে। বর্তমানে বড়পুকুরিয়া থেকে বছরে প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন কয়লা তোলা হচ্ছে। তখন প্রায় দশগুন বেশি কয়লা প্রয়োজন হবে। এই বাড়তি কয়লার যোগান দিতে বড়পুকুরিয়ার উত্তরাংশ থেকে উম্মুক্ত ভাবে কয়লা তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বড়পুকরিয়ার এই কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করারও পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে। খনি খননের সিদ্ধান্ত নেয়ার পরপরই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দরপত্র আহবান করা হবে। এক দিকে কয়লা উত্তোলন চলবে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলবে। কয়লা তোলার সাথে সাথে যেন বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়, এই লক্ষে কাজ হচ্ছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরুর পর অারো পাঁচ বছর লাগবে কয়লা তুলতে।
বাংলাদেশের একমাত্র বড়পুকুরিয়া খনি থেকে ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে কয়লা তোলা হয়। মাটির নিচে সুড়ঙ করে এই কয়লা তোলা হচ্ছে।