বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি অবরোধের ৯ম দিন
টানা নয় দিন কর্মবিরতি চলছে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে। ১৩ দফা দাবী না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছে আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারীরা।
এদিকে সার্বিক বিষয় পর্যালোচনার জন্য জ্বালানি বিভাগ থেকে বড়পুকুরিয়ায় প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রতিনিধিদল বড়পুকুরিয়া যাওয়ার আগে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেয়ার আনুরোধ করা হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম সোমবার খনি গেটে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে বলেন, ন্যায়সঙ্গত ১৩ দফা দাবীর ব্যাপারে খনি কর্তৃপক্ষ যদি কোন ইতিবাচক উদ্যোগ না নেয় তাহলে মঙ্গলবার সকাল থেকে গোটা খনি এলাকা অবরোধ করা হবে। কর্মসূচি চলাকালে কোন কর্মকর্তাকে খনির বাইরে থেকে ভেতরে এবং ভেতর থেকে বাইরে যেতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, শুরু থেকে আমরা আমাদের ১৩ দফা দাবী নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছিলাম। এসব দাবীর অধিকাংশ ২০১৭ সালে আগষ্ট মাসে করা তৃপক্ষীয় চুক্তির অন্তর্ভূক্ত আছে। তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৫ই মে মঙ্গলবার খনির আবাসিক গেটের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে খনি কর্মকর্তারা পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের ওপর হামলা করে। হামলায় ৮ শ্রমিক মারাত্মকভাবে আহত হন। এদের অনেকে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সভাপতি ওয়াজেদ আলী, ক্ষতিগ্রস্ত ২০ গ্রাম সমন্বয় কমিটির আহবায়ক মিজানুর রহমান মিজান ও সাবেক আহবায়ক মশিউর রহমান বুলবুল ও এহসানুল হক সোহাগ।
এর আগে সকাল ১১টায় খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম ও ক্ষতিগ্রস্ত ২০ গ্রাম সমন্বয় কমিটির আহবায়ক মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে এক বিক্ষোভ মিছিল খনির চারপাশের সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে খনির শ্রমিক-কর্মচারী ও কয়েক হাজার গ্রামবাসী যোগ দেন।
শ্রমিকদের দাবীর বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দীন আহাম্মদ বলেন, এনিয়ে রোববার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, জ্বালানি সচিব ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। এর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে টেলিফোনে মতবিনিময় করা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে। তারপর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রতিনিধি দল বড়পুকুরিয়া এসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। ইতিমধ্যে বিষয়টি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, তাদের উপদেষ্টা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।