বড়পুকুরিয়া খনিতে কয়লা বিক্রি বন্ধ
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া খনি ইয়ার্ডে মজুদ সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে আসায় কয়লা বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার খনি কর্তৃপক্ষ বিক্রি বন্ধের নোটিশ টানিয়ে দেয়।
এদিকে, কয়লার দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন গুজবে গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুদিনে প্রায় ৫২ হাজার টন কয়লা বিক্রি হয়ে যায়।
হঠাৎ করে কয়লা বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে কয়লা কিনতে আসা অনেক ব্যবসায়ী ও ইটভাটা মালিক খালি হাতে ফিরে গেছেন।
তাদের অভিযোগ স্থানীয় একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে বিপুল পরিমাণ কয়লা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বড়পুকুরিয়ার কয়লা প্রতিটন ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করা হতো। গত বছর বেসরকারি পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ কয়লা ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করে তুলনামুলক কম দামে (৬-৮ হাজার টাকা টন) দেশীয় বাজারে বাজারজাত শুরু করে। এর ফলে বড়পুকুরিয়ার কয়লা বিক্রি কমে যায়। এ অবস্থায় খনি কর্তৃপক্ষ দুই দফায় কমিয়ে প্রতিটন কয়লার মূল্য ৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করে। কিন্তু আমদানি করা কয়লার চেয়ে দেশি কয়লার মান ভাল হওয়ায়ও দাম বেশির কারণে আশানুরুপ বিক্রি হচ্ছিল না।
খনি কোল ইয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতা আড়াই লাখ টনের বিপরীতে মজুদ দাঁড়ায় ৩ লাখ ৩২ হাজার টন কয়লা। এই বিপুল পরিমাণ মজুদ কয়লা নিয়ে খনি কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়ে। পরে গত ২২ মে কয়লার মূল্য আরেক দফা কমিয়ে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। এতে কয়লার বিক্রি কিছুটা বেড়ে যায়।
গত মে ও জুন মাসে ৯৮ হাজার টন কয়লা বিক্রি হয়। এ সময়ের মধ্যে পার্শ্ববর্তী ২৫০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয় প্রায় ১ লাখ টন কয়লা। গত ১০ জুলাই পর্যন্ত মজুদ কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৫ হাজার টন। এরমধ্যে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ৬০-৬৫ হাজার টন মজুদ রেখে অবশিষ্ট কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারবে খনি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, প্রায় একমাস ধরে খনি থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। কয়েকমাস পর ইট পোড়া মৌসুম শুরু হবে। ধীরে ধীরে মজুদও কমে আসছে। সোমবার (১১ জুলাই) হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে পড়ে খনি কর্তৃপক্ষ কয়লার দাম বৃদ্ধি করবে। গুজব ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইটভাটা মালিক ও কয়লা ব্যবসায়ীরা কয়লা কিনতে খনিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ফলে সোম ও মঙ্গলবার দু’দিনে ৫২ হাজার টন কয়লা বিক্রি হয়।
খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুজ্জামান জানান- ১১ জুলাই পর্যন্ত আগে আসলে আগে পাবেন এই নীতিতে কয়লা বিক্রি করা হয়। ১২ জুলাই হঠাৎ চাপ বেড়ে গেলে উপস্থিত ক্রেতাদের প্রত্যেককে ১০০-২০০ টন করে কয়লা দেওয়া হয়। ১৩ জুলাই অনেক ভাটা মালিক ও কয়লা ব্যবসায়ী কয়লা কিনতে আসলেও তাদের কয়লা দেওয়া সম্ভব হয়নি।