বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভবিষ্যৎ কী!
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা ঠিকাদারের সঙ্গে খনি কোম্পানির চুক্তির মেয়াদ আর মাত্র ২০ মাস পর, ২০২১ সালের ১০ আগস্ট শেষ হচ্ছে। তখনই বিদ্যমান খনি থেকে কয়লা তোলাও শেষ হবে। এরপর কয়লা তুলতে হলে খনির ভূগর্ভস্থ ‘উত্তোলন এলাকা’ সম্প্রসারণ কিংবা ক্ষেত্রটির উত্তর অথবা দক্ষিণে নতুন খনি নির্মাণ করতে হবে।
এ জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বিস্তারিত প্রকৌশল ডিজাইন প্রণয়ন, ঠিকাদার নিয়োগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ এখনই শুরু করা প্রয়োজন; কিন্তু কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। এই অবস্থায় ২০২১ সালের আগস্টের পর বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কীভাবে চলবে তা অনিশ্চিত। পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বিষয়গুলো নিয়ে এখনো তারা কোনো পর্যালোচনা করেননি।
অবশ্য খনি কর্তৃপক্ষ দুটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় দুটি প্রাথমিক জরিপ (কনসেপচুয়াল স্টাডি) করিয়েছে। তবে তার ভিত্তিতে নীতি নির্ধারক পর্যায়ে কোনো কাজ হচ্ছে না।
বড়পুকুরিয়ায় দেশের প্রথম এবং একমাত্র কয়লা খনি ২০০৫ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। ওই বছরই সেখানে ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়। ২০১৮ সালে সেখানে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও একটি তাপবিদ্যুৎ ইউনিট চালু করা হয়। ফলে সেখানকার মোট ৫২৫ মেগাওয়াট স্থাপিত ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কয়লার নিশ্চিত সরবরাহ অতি জরুরি।
এ জন্য কয়লার দরকার দৈনিক ৫ হাজার ২০০ টন, বছরে ১৩ লাখ টন। অথচ বিদ্যমান খানির উৎপাদন ক্ষমতা বছরে সর্বোচ্চ দশ লাখ টন। সেই সরবরাহও আর মাত্র ২০ মাস পর শেষ হয়ে যাবে। আমদানি করা কয়লা দিয়ে যে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো অসম্ভব, তাও ইতিমধ্যে প্রমাণিত।
বিপিডিবি ২০১৮ সালে এক লাখ টন কয়লা আমদানির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল। তাতে প্রতি টন কয়লা বড়পুকুরিয়ায় পৌঁছে দিতে ২৮২ মার্কিন ডলার (শুল্ক-কর ছাড়া) দাম হাঁকা হয়। বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা প্রতি টন ১৩০ মার্কিন ডলারের বিপরীতে বিপিডিবির জন্য ওই দাম ছিল অভাবনীয়।