পাইপলাইনে ডিজেল আমদানি: ভারতের সঙ্গে খুব শিগগির চুক্তি

ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১৫ বছর মেয়াদে আন্তঃসীমান্ত পাইপলাইনে এ জ্বালানি তেল আনা হবে। খুব শিগগির এ বিষয়ে চুক্তি করবে দুই দেশ।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) সূত্র জানায়, দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত থেকে বার্ষিক আড়াই লাখ থেকে ৪ লাখ টন ডিজেল পাইপলাইনে আমদানি করা হবে।

এ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হওয়ার পাশাপাশি দুই দেশের সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছে। ভারতের আসামের নুমালীগড় রিফাইনারি থেকে এ তেল আনা হবে।

নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর তেলের ডিপো পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন করা হবে। এই ‘ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন’ এর ১২৫ কিলোমিটার বাংলাদেশে এবং ৫ কিলোমিটার ভারতে হবে।

জানা গেছে, চুক্তি কার্যকরের পর প্রথম তিন বছর আড়াই লাখ মেট্রিক টন, এর পরের তিন বছর ৩ লাখ টন এবং সপ্তম থেকে ১৫তম বছর পর্যন্ত বার্ষিক ৪ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হবে।

গত ২৩ আগস্ট ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পাইপলাইনের প্রস্তাবটি অনুমোদন দেন।

চুক্তির খসড়া অনুযায়ি, তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারদর অনুযায়ী হবে। তেল আমদানির প্রিমিয়াম বা পরিবহন খরচ প্রতি ব্যারেলে (প্রায় ১৫৯ লিটার) সাড়ে ৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতি ব্যারেল তেল আমদানিতে প্রিমিয়াম বাবদ ২ দশমিক ২ ডলার ব্যয় করে।

এ প্রসঙ্গে বিপিসির এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে বিদেশ থেকে তেল চট্টগ্রামে আসে। সেটি উত্তরবঙ্গে পাঠাতে প্রতি ব্যারেলে ৪ দশমিক ৪ ডলার খরচ হয়। সব মিলিয়ে প্রিমিয়াম দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৬ ডলার। সে হিসেবে ভারত থেকে আনা তেলের খরচ কম পড়বে। তবে অন্য এক কর্মকর্তা মনে করেন, তেল পরিবহনে খরচ ও বাষ্পজনিত ক্ষয়ের হিসেব ধরে প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়। সেই হিসেব ধরে প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা উচিত। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পরিবহন খরচ কত পড়ে সেটি ধরে খরচ নির্ধারণ করা যৌক্তিক নয়।

পাইপলাইনে তেল আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিপিসি’র চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তবে বিপিসির পরিচালক (অপারেশন ও পরিকল্পনা) সৈয়দ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক জানান, খুব শিগগিরই তেল আমদানির জন্য চুক্তি হবে বলে আশা করছি।

বিপিসির এক কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে বছরে ১০ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে এখন বছরে আড়াই থেকে ৪ লাখ টন আমদানির চুক্তি করা হবে। প্রস্তাবিত পাইপলাইনটির সিংহভাগ বাংলাদেশ অংশে হবে। এ জন্য ভারত ৩০৩ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে বাংলাদেশ অংশে বিপিসি এবং ভারত অংশে ভারতীয় পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন পাইপলাইন করবে।