বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি সই

ভারতের ত্রিপুরা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি সই হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে উভয় দেশের মধ্যে এই চুক্তি হয়।
আগামী ২৩শে মার্চ ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎ আসা শুরু হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুৎ নেয়ার কার্যক্রম শুরু করবে।
চুক্তি অনুযায়ি, ভারতের অংশের সঞ্চালন খরচসহ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পাঁচ রূপি ৫০ পয়সা বা ছয় টাকা ৪৩ পয়সা। বাংলাদেশ অংশে আলাদা সঞ্চালন খরচ দিতে হবে। যে বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে তার নির্ধারিত (ক্যাপাসিটি) খরচ নেই। অর্থাৎ বাংলাদেশ যখন যতটুকু বিদ্যুৎ আমদানি করবে ততটারই বিল দিতে হবে। নির্ধারিত খরচ নেই। বিদ্যুৎ না আনলে কোনও বিল দেয়া লাগবে না।
এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যাপার নিগম লিমিটেড (এনভিভিএন) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নন্দো কিশোর শর্মা ও বাংলাদেশ বিদ্যৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ভারপ্রাপ্ত সচিব মাজহারুল হক চুক্তিতে সই করেন। এসময় বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলামসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে ভারত থেকে বাংলাদেশের ভেড়ামারা দিয়ে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। এই ৫০০ মেগাওয়াটের মধ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে নেয়া ২৫০ মেগাওয়াটের দাম প্রতি ইউনিট দুই রূপি ৪৬ পয়সা। বাকি ২৫০ মেগাওয়াট বেসরকারিভাবে নেয়া হচ্ছে, যার দাম প্রতি ইউনিট পাঁচ রূপি ৪৬ পয়সা। আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ চলছে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এনার্জি বাংলাকে বলেন, এই বিদ্যুৎ আমদানির মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
অবকাঠামো তৈরী হলেও দাম নির্ধারন না হওয়ায় গত কয়েকমাস বিদ্যুৎ নিতে পারেনি বাংলাদেশ। পরে গত জানুয়ারি মাসে ত্রিপুরার বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে বাংলাদেশ সফর করেন। সে সময় উভয় দেশের মধ্যে আলোচনার মধ্যেমে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়।
সে সময় ত্রিপুরার বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে বলেন, বাংলাদেশ সরকার তার দেশ থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ আমদানি করবে তার পরিমাণ খুব বেশি না। তবে এর মধ্য দিয়ে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গভীর হবে। বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা ছাড়া পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সম্ভব হতো না। সে সময় ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছায় দুই দেশ বিদ্যুতের লেনদেন করছে।
ভারত প্রথমে ত্রিপুরার বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট প্রায় আট রূপি করে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সম্মত হয়নি। সেজন্যই বিদ্যুৎ আমদানি সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে দর কষাকষির পর ভারত প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ সাড়ে পাঁচ রূপি করে দিতে সম্মত হওয়ায় ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পথ সুগম হয়েছে।