ভারত থেকে তেল আমদানি
ভবিষ্যত জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারতের সঙ্গে নতুনভাবে যুক্ত হলো বাংলাদেশ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উভয় দেশের জন্য লাভজনক করতে আদান প্রদান করা হবে জ্বালানি তেল।
তারই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসে পৌছালো দ্ইু হাজার ২০০ মেট্রিকটন ডিজেল। ভারতের নুমালীগড় থেকে ট্রেনের ওয়াগনে করে এই তেল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পার্বতীপুর তেল ডিপোতে আসে।
রেলের ৪২টি ওয়াগনে ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুরে তেল আনা হয়। ভবিষ্যতে ভারতের শিলিগুড়ি থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ইন্দো-বাংলা ফ্রেণ্ডশিপ পাইপ লাইন করা হবে। ১৩৫ কিলোমিটার এই পাইপ লাইনের মধ্যে ১৩০ কিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে এবং ৫ কিলোমিটার ভারত অংশে হবে। সেই পাইপে করেই বাংলাদেশ ভারত থেকে তেল আনবে। দেশের দেশের মোট চাহিদার একপঞ্চমাংশ অর্থাৎ বছরে প্রায় ১০ লাখ টন তেল ভারত থেকে আমদানি করা হবে।
গতকাল আসা তেল গড়ে প্রতি লিটার প্রায় ৩৯ টাকা পড়বে। আন্তর্জাতিক বাজার (মধ্যপ্রাচ্য) দরের সাথে সাত ডলার পরিবহণ খরচ যোগ করে তেলের দাম নির্ধারন করা হবে। দেশের উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মেটাতে এই তেল ব্যবহার করা হবে।
এদিকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আমদানির জন্য সমীক্ষা করতে পরামর্শক নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাইপলাইন স্থাপন করতে কমপক্ষে তিন বছর লাগবে।
গতকাল পাবর্তীপুরে এ তেল গ্রহণের সময় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি বিষযক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, বিপিসির চেয়ারম্যান মাসুদ রেজা খানসহ জ¦ালানি মন্ত্রণালয় ও বিপিসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে বৃহষ্পতিবার ভারতের পেট্রোরশায়ন প্রতিমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান শিলিগুঁড়ি সীমান্তে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশে তেল রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের আমদানির মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরো ভাল হবে। শুধু জ্বালানি নয়, অন্য অনেক খাতে দুই দেশ সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারে। এতে দুই দেশেরই উপকার হবে। ভবিষতে বাংলাদেশও তেল শোধন করে রপ্তানি করবে। ভারত থেকে তেল আমদানি করলেও বাংলাদেশের শোধনাগারে কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে না বলে তিনি জানান।
নসরুল হামিদ বলেন, ভবিষ্যৎ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিবেশি দেশ থেকে জ্বালানি আমদানি শুরু করেছে বাংলাদেশ। এ সহযোগিতা ধারাবাহিকভাবে চলবে। তিনি বলেন, ্উত্তরাঞ্চলের মানুষ কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। এ অঞ্চলের জ্বালানি চাহিদা পুরণে সরকার ভারত থেকে তেল আমদানি করেছে।
হাই কমিশনার বলেন, খুব শিগগির দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পাইপলাইন স্থাপনের প্রক্রিয়া উদ্বোধন করবেন। পাইপলাইন স্থাপনে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। জ্বালানি ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি, রেলসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিপিসির চেয়ারম্যান বলেন, তেল আমদানির ক্ষেত্রে সময় বাঁচবে। অপচয় কমবে। কখনও কখনও দামও কম হবে। পাইপ লাইনে পরিবহন ভাড়া কত হবে তা এখনও ঠিক হয়নি বলে তিনি জানান।